আগামী দুই দশকে অন্টারিওর জনসংখ্যা ৬০ লাখ বাড়তে পারে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই সরকারের উচিত বর্ধিত জনসংখ্যার সংকুলানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করা।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার নতুন প্রাক্কলন বলেছে, ২০৪৩ সালের মধ্যে অন্টারিওর জনসংখ্যা ১ কোটি ৪৮ লাখ থেকে বেড়ে হবে ১ কোটি ৯০ লাখে। তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আরও বেশি হলে সংখ্যাটি ২ কোটি ১০ লাখেও পৌঁছে যেতে পারে।
অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে একে ভালো সংবাদ হিসেবে দেখছেন। কিন্তু নিঃসন্দেহে গোল্ডেন হর্সশু অঞ্চলের জন্য এটা চ্যালেঞ্জও ডেকে আনবে। কারণ, এখনই আবাসন সংকট নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর অধ্যাপক ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাতি সিয়েমিয়াতিসকি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রদেশের জন্য সত্যিই ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ। এটা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করবে এবং পরিবারগুলোর মধ্যে পুনর্মিলন ঘটাবে। আমাদের কমিউনিটির সংস্কৃতি ও গতিময়তার জন্য এটা খুবই ভালো। কিন্তু আমাদের সীমিত অবকাঠামোর ওপর চাপও তৈরি করবে বর্ধিত এ জনসংখ্যা। অবকাঠামো নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। এটা এমন কিছু নয় যে, বোতাম চাপলেই হয়ে যাবে।
কোভিড-১৯ মহামারির সময় জনগণের মধ্যে গ্রেটার টরন্টো এরিয়া ছেড়ে কম ব্যয়বহুল বাজারের দিকে যাওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নতুন প্রাক্কলনে অন্টারিওতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে হারের কথা বলা হয়েছে, কা আলবার্টা ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার চেয়ে বেশি।
অন্টারিওতে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে মূল ভূমিকা রাখবেন অভিবাসীরা। কিন্তু প্রাক্কলনে বয়স্ক জনসংখ্যার দিকেও নির্দেশ করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা ও লং-টার্ম কেয়ার ব্যবস্থার ওপর চাপ তৈরি করবে।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা বলছে, অন্টারিওতে ৮৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ২০২১ সালের ৩ লাখ ৪৫ হাজার থেকে বেড়ে ২০৪৩ সালে ৯ লাখ ২১ হাজারে দাঁড়াবে।
এদিকে ফোর্ড সরকার আবাসন সংকট সমাধানে আগামী দশকে ১৫ লাখ গৃহ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার স্মার্ট প্রোসপারিটি ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে প্রদেশ এ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম নাও হতে পারে বলে জানিয়েছে।
সিয়েমিয়াতিসকি সিপি২৪কে বলেন, দিনশেষে জনসংখ্যা বৃদ্ধি খুবই ইতিবাচক। এর অর্থ হলো লোকজন তাদের নতুন জীবন শুরু করতে অন্টারিও এবং গ্রেটার টরন্টো এরিয়াকে বেছে নিচ্ছেন। অনেকেই এখানে ব্যবসা শুরু করতে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাইছেন।
কিন্তু আবাসনের স্বল্পতার দিকে তাকালে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার এ প্রাক্কলন ভয়ের বলে মন্তব্য করেছেন অন্টারিও রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট স্ট্যাসি ইভয়। তিনি বলেন, এখানে বাড়ির দাম অনেক বেশি, এখানে বেড়ে ওঠা অনেক তরুণকে তাদের কমিউনিটি ছেড়ে যেতে বাধ্য করবে।
রয়্যাল লাপেজের নতুন এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জিটিএর যেসব মিলেনিয়াল এখনও তাদের বর্তমান কমিউনিটির মধ্যে বাড়ি কেনার স্বপ্ন দেখছেন তাদের হার মাত্র ২২ শতাংশ।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার প্রাক্কলন অনুযায়ী, কানাডার মোট জনসংখ্যাও ২০২১ সালের ৩ কোটি ৮০ লাখ থেকে বেড়ে ২০৬৮ সালে ৫ কোটি ৬৫ লাখে উন্নীত হতে পারে।