প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় বলেছেন, ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাচ্ছে কানাডা। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যকে আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমে শনিবার ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপের ঘোষণা দেওয়ার পর এই বিবৃতিতে দিয়েছেন ট্রুডো। এটাই ইসরায়েলে ইরানের প্রথম সরাসরি হামলা।
পার্লামেন্টারি প্রেস গ্যালারি ডিনারে ট্রুডো বলেন, ইরান সরকার যে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অসম্মান করে এই হামলার মধ্য দিয়ে সেটাই আরেকবার প্রমাণিত হয়েছে। এই হামলা থেকে ইসরায়েলের নিজেকে এবং এর জনগণকে রক্ষার অধিকারের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা উপদেষ্টা, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ এবং চিফ অব দ্য প্রিভি কাউন্সিলের কাছ থেকে তিনি নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য পাচ্ছেন।
ইরানের হামলার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ১৩ এপ্রিল ইসরায়েল তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং ১৪ এপ্রিল ভোরে দেশজুড়ে এয়ার-রেইড সাইরেন বেজে ওঠে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ইরান বহু ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাত্র ছুড়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগই ইসরায়েলের সীমান্তের বাইরেই প্রতিহত করা হয়েছে। যুদ্ধজাহাজই ইসরায়েলি আকাশসীমার বাইরে ১০টির বেশি ক্রুজ ক্ষেপনাত্র প্রতিহত করেছে। অল্প কয়েকটি ইসরায়েলের ভূখ-ে এসে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ইসরায়েলের দিকে যাওয়া কিছু ক্ষেপনাত্র তারা প্রতিহত করেছে।
ইসরাইলি বিমান হামলায় সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেট ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার পর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। ওই হামলায় ইরানের দুই জেনারেল নিহত হন। ইরান এই হামলার বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি ১২ এপ্রিল বলেন, উচ্চ ঝুঁকির আলোকে কানাডিয়ানদের ইসরায়েলে সব ধরনের ভ্রমণ এড়িয়ে চলা উচিত। যেসব কানাডিয়ান ইসরায়েলে অবস্থান করছেন তাদের বাণিজ্যিক বাহনে দেশটি ত্যাগ করা উচিত।
বিরোধীদলীয় নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভর ১৩ এপ্রিল বলেন, ইরানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে কানাডাকে অবশ্যই তার মিত্রদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। কানাডা সরকারকে অবশ্যই এখনই তেহরান নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসী গ্রুপ আইআরজিসি নিষিদ্ধ করতে হবে, যাতে করে আমাদের জনগণ সুরক্ষায় পায় এবং সরকার তহবিল সংগ্রহ, পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের জন্য আমাদের দেশকে ব্যবহার করতে না পারে।
এনডিপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স ক্রিটিক হিদার ম্যাকফারসন বলেন, আঞ্চলিক যুদ্ধে হতাহত নিয়ে কানাডিয়ানরা উদ্বিগ্ন। আমাদের কূটনীতি এটা সমাধান করবে। কানাডা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এই সংকট নিরসন করতে হবে।
কানাডায় নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ট্রুডো ও জোলিকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।