বাড়ির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় করার পরিকল্পনা হিসেবে বাড়ি নির্মাণে গতি আনার কথা ভাবছে সরকার। তবে এর ফলে স্বল্প মেয়াদে নির্মাণ ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে বাড়তি সরবরাহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনসংখ্যার দ্বিগুন হারে বাড়ি নির্মাণ ও উচ্চমূল্যের জন্য দায়ী সরবরাহ স্বল্পতা কমাতে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল সরকার গত মার্চে আগামী দশকে ৩৫ লাখ বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কানাডার আবাসন সংকট সরকার যতটা বলছে ততটা প্রকট নয়। কারণ, বছরে আড়াই লাখের মতো বাড়ির নির্মাণ শুরু হয়েছে অর্থাৎ বেকর্ড সংখ্যক বাড়ি নির্মাণাধীন রয়েছে। যদিও নির্মাণ শেষ করা পিছিয়ে আছে।
আবাসন নীতি বিষয়ক পরামর্শক ও অটোয়ার কার্লটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক স্টিভ পমেরয় বলেন, অভিবাসনের কারণে খানার যে প্রবৃদ্ধি তার চাহিদা মেটাতে নতুন সরবরাহ অবশ্যই প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তবে ৩৫ লাখ আমার কাছে পুরোপুরি অতিরঞ্জিত বলে মনে হয়।
উচ্চসংখ্যক নির্মাণে দ্রুত গতি আনার চেষ্টার মধ্যে সত্যিই ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন পমেরয়। তিনি বলেন, আমরা যদি এটা বাড়ানোর চেষ্টা করি তাহলে পরিণাম হিসেবে আমরা শ্রমিক, ভূমি ও নির্মাণ সামগ্রীর সরবরাহ সংকটে পড়ে যাবো, যা বাড়ির দাম শেষ পর্যন্ত আরও বাড়িয়ে দেবে।
কানাডার নির্মাণ শিল্পে সতর্ক সংকেত এরই মধ্যে বেজে উঠেছে। শিল্পটিকে মাত্রাতিরিক্ত শ্রমিক স্বল্পতা ও অবসরজনিত সংকটের মুখোমুখী হতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বৈশি^ক সরবরাহ সংকটের কারণে কাঁচামালের উচ্চমূল্যের বিষয়টি তো আছেই।
এছাড়া বাড়ি নির্মাণের বিষয়টি প্রাদেশিক ও মিউসিপাল সরকারের এখতিয়ারে থাকায় জাতীয় কৌশল প্রণয়ন কঠিন হয়ে পড়ছে। ২০১৫ সালের শেষ দিকে জাস্টিন ট্রুডো সরকার গঠনের পর জাতীয়ভাবে বাড়ির দাম দ্বিগুনের বেশি হয়েছে। গত ১৫ বছরে কানাডায় বাড়ির দাম বৃদ্ধির হার যুক্তরাষ্ট্র ও জি-৭ভুক্ত অন্যান্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছে।
মূল্যবৃদ্ধির কারণে টরন্টো ও ভ্যানকুভারের মতো নগরীতে অনেক বাসিন্দার কাছেই বাড়ি ক্রয় সামর্থের বাইরে চলে গেছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমাতে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ট্রুডো সরকার সম্প্রতি বিদেশিদের জন্য দুই বছন বাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।