
ড্যান ট্রিভেটকে গত মাসে একটি শয্যার জন্য প্রায় ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালের জরুরি কক্ষেই অবস্থান করতে হয়েছিল। তিনি এখন বলছেন, অন্টারিওর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
সিটিভি নিউজ টরন্টোকে ট্রিভেট বলেন, ২৬ অক্টোবরে মিসিসোগাতে একটি দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। এরপর বাড়িতে আসার আগে তিন ঘন্টা থাকতে হয় মাউন্ট সিনাই হসপিটালে। বাড়িতে এসে ডিনারের সময় পেটে ভীষণ ব্যথা টের পান তিনি। মনে হচ্ছিল কেউ আমার পেটে ছুরিকাঘাত করছে এবং পাজরের হাড়গুলো ভেঙে যাচ্ছে। ঘেমে-নেয়ে এমন অবস্থা হয়েছিল যে শ্বাস নিতে পারছিলাম না।
অবশেষে ৯১১-এ কল করতে সমর্থ হলে ট্রিভেটকে আনুমানিক রাত ২টার দিকে টরন্টো জেনারেল হসপিটালে নেওয়া হয়। ট্রিভেট বলেন, হার্ট অ্যাটাক যাতে না হয় সেজন্য একটি হার্ট মনিটরসহ স্ট্রেচারেই তাকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ওই তিন ঘণ্টা তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে প্যারামেডিক তার পাশে ছিলেন। এরপর ট্রিভেটকে র্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট সেন্টারে যেতে বলা হয়। পরদিন ২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই তাকে অপেক্ষা করতে হয়। মাঝখানে অতিবাহিত হয়ে যায় প্রায় ২৪টি ঘণ্টা।
ট্রিভেড বলেন, সেখানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বালাই নেই। রোগীদের অবস্থা নিয়ে তাদের সঙ্গে চিকিৎসকের কথাবার্তা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। আমার চারপাশে সবারই চিকিৎসা চলছিল। আমি সেটা শুনতে পাচ্ছিলাম।
অন্টারিওজুড়ে হাসপাতালে জরুরি কক্ষে অপেক্ষমাণ সময় সেপ্টেম্বরে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। হেলথ কোয়াইলটি অন্টারিওর (এইচকিউও) উপাত্ত অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তির জন্য রোগীদের গড়ে ২১ দশমিক ৩ ঘণ্টা জরুরি কক্ষে অপেক্ষমান থাকতে হয়েছে। আগস্টে অপেক্ষমাণ সময় ছিল ২০ দশমিক ৭ এবং জুলাইয়ে ২০ দশমিক ৮ ঘণ্টা।
এর আগে অন্টারিও লিবারেলরা বলেছিল, ২০০৮ সালে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সেপ্টেম্বর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে সেপ্টেম্বর। এমপিপি ডা. আদিল শামজি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, এই উপাত্ত আপনি মাসভিত্তিক নাকি বছরভিত্তিক হিসাব করবেন তাতে কিছু যায় আসে না। স্বাস্থ্যসেবা খাতের কর্মকা-ের নাটকীয় অবনতি ঘটেছে এবং এখন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
অন্টারিও হেলথের ফাঁস হয়ে যাওয়া এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই মাসের প্রত্যেকদিন সকাল ৮টায় প্রদেশের সব হাসপাতালের জরুরি কক্ষে ৯৪৬ জন রোগী শয্যার অপেক্ষায় ছিলেন। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্সের অফলোড সময় বেড়েছে ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে সেপ্টেম্বরে হাসপাতালে প্রবেশের আগে রোগীদের গড়ে প্রায় ৯০ মিনিট অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে।