
ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসার পর গ্যালিনা ডুরিসভিটের কয়েক মাস কেটে গেছে গ্রেটার টরন্টো এরিয়াতে ভাড়া বাসা খুঁজেই। রেন্টাল দেখে আবেদনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু বিপাকে পড়েন যখন কিছু বাড়ির মালিক ছয় মাসের অগ্রিম ভাড়া দাবি করেন। যদিও প্রাদেশিক আইনে এর কোনো সুযোগ নেই।
৪৫ বছর বয়সী ডুরিসভিট বলেন, আমি হতাশ। তারা আমার কাছে ছয় মাসের পর্যন্ত ভাড়া চান। আমার অবস্থাটা আপনারা বুঝতেই পারছেন। কোনো অর্থকড়ি ছাড়াই আমি চলে এসেছি।
১৫ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে গত মার্চে কানাডায় পালিয়ে আসেন ডুরিসভিট। তিনি বলেন, ঋণের ইতিহাস না থাকা এবং সম্প্রতি চাকরি শুরু এ ধরনের সমস্যায় পড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। আমি শুধু আবেদনই করে যাচ্ছি এবং কেউই আমাকে ভাড়া দিচ্ছে না। বিনামূল্যে থাকতে চাইছি না। আমি ভাড়া পরিশোধ করবো।
ডুরিসভিটের মতো ইউক্রেন থেকে সম্প্রতি অন্টারিওতে আসা আরও অনেকেই বাড়ি ভাড়া পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে রিসেটেলমেন্ট সংস্তাগুলো। এর কারণ, বাড়ি মালিকদের কেউ কেউ ছয় থেকে এক বছর পর্যন্ত অর্থ জমা নিতে চাইছেন। যদিও রেসিডেন্সিয়াল টেনান্সিস অ্যাক্টে এ ধরনের চর্চা নিষিদ্ধ।
লিগ অব ইউক্রেনিয়ান কানাডিয়ান্সের নির্বাহী পরিচালক নাদিয়া জেরেলিয়ক বলেন, নবাগতরা নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছেন। কারণ, কানাডায় আসার পর কোনো ধরনের ক্রেডিট হিস্ট্রি ও চাকরি ছাড়াই অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজতে হচ্ছে তাদের। এই দুটি বিষয়ের বাইরেও আমরা যেটি দেখতে পাচ্ছি তা হলো বাড়ি মালিকদের খুবই আপত্তিজনক চর্চা।
বিশেষ ফেডারেল কর্মসূচির আওতায় ইউক্রেনীয় নবাগতরা কানাডায় আসছেন। এই কর্মসূচিতে তাদেরকে কানাডায় তিন বছরের জন্য কাজের বা পড়ালেখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, দুই সপ্তাহ হোটেলে থাকার পর অ্যাপার্টমেন্ট না পাওয়া ব্যক্তিরা সাময়িক লজিংয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন। কারো কারো আবার ঠিকানা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র। সংখ্যায় কম হলেও কিছু ইউক্রেনীয় ইউক্রেনে ফিরেও গেছেন।
ডুরিভিস্ট তার দুই বোন এবং সন্তানদের নিয়ে কানাডায় এসেছেন। তার এক বোন ও তার ছেলে সাশ্রয়ী অ্যাপার্টমেন্ট না পেয়ে এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে গত মে মাসে ইউক্রেনে ফিরেও গেছেন। অন্য বোন ও তার প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে চাকরি জোগাড়ের পর বসবাসের একটি স্থান খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন।
ফেডারেল সরকারের তথ্যমতে, ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত আকাশ ও স্থলপথে ১ লাখ ১২ হাজার ইউক্রেনীয় কানাডায় এসেছেন। এছাড়া ১৭ মার্চ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সাময়িক বসবাসের জন্য ৬ লাখ ৬০ হাজার আবেদনও পেয়েছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৬০ হাজার আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে।