সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও ভারতের মতো দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর দিয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল প্রকাশ করেছে লিরাবেল সরকার। পাকিস্তান থেকে শুরু জাপান পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে কৌশলপত্রে ১৩০ কোটি ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু তহবিলের ঘোষণা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দিয়েছে লিবারেলরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি ভ্যানকুভারে সাংবাদিকদের বলেন, আজ আপনারা যা দেখছেন তা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির দিক বদল, যা দীর্ঘদিন হয়নি। এতে এই বার্তা পরিস্কার করে দেওয়া হয়েছে যে, কানাডা এই অঞ্চলে আছে এবং তারা আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারে।
নতুন ঘোষণার মধ্যে আছে ওই এলাকার জন্য তৃতীয় নেভাল ফ্রিগেট বাবদ প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ এবং সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক মহড়া ও সাইবার নিরাপত্তায় সহযোহিতা জোরদার করা। ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতাও বাড়াবে কানাডা। এর আওতায় ভারতের নয়া দিল্লি ও চন্ডিগড়ে ভিসা অফিস খোলা হবে। নতুন ভিসা অফিস খোলা হবে পাকিসন্তানের ইসলামাবাদ ও ফিলিপিন্সের ম্যানিলাতেও।
এ মাসের গোড়ার দিকে এ অঞ্চলে ৬০টি নতুন কূটনৈতিক পদ সৃষ্টির জন্য ৯ কোটি ২৫ লাখ ডলারের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তবে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে কোনো লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ করা হয়নি এবং অর্থের এই অংকে কোনো ধরনের পরিবর্তনের পরিকল্পনার কথা জোলিও বলেননি। তবে কৌশলপত্রে বিদ্যমান দূতাবাসগুলোতে কূটনৈতিক কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি হাওয়াই ও ফিজিতে নতুন পদ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া সুশান থেকে শুরু করে সমুদ্র ব্যবস্থাপনা এবং জীবশ্ম জ¦ালানি থেকে বেরিয়ে আসতে কানাডার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী দেশগুলোতে ২০০ বিশেষজ্ঞ পাঠাবে অটোয়া।
তহবিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে রোববার এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাঁচ বছরের সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বছরভিত্তিক ব্যয়ের কোনো মানদ- নির্ধারণ করা হয়নি। যদিও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনীতা আনান্দ বলেছেন, তৃতীয় ফ্রিগেট আগামী বছরই সশস্ত্র বাহিনীতে যুক্ত হবে এবং হ্যালিফ্যাক্স থেকে সেটি ভারত মহাসাগরে যাবে।
তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে কাজ করাটা হবে একটা পরিবর্তন, যাতে এই অঞ্চলে কানাডার নৌবাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত হবে।
বাণিজ্যের ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী এনজি বলেছেন, এই অঞ্চলের নতুন বাজারে রপ্তানির জন্য ব্যবসায়ীদের জন্য শিগগিরই নতুন একটি অনুদান চালু করবেন তিনি। ব্যবসায়ীদের কি প্রয়োজন সে ব্যাপারে আমি খুবই বাস্তববাদী হতে চাই।
ব্যবসায়ীরা তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। বিজনেস কাউন্সিল অব কানাডার প্রধান গোল্ডি হায়দার বলেন, এ ধরনের বিস্তারিত আঞ্চলিক পরিকল্পনা কার্যকর। এতে কেবল কানাডার স্বার্থের কথাই বলা হয়নি, বিদেশে ব্যবসা পরিচালনা ও বিনিয়োগে কানাডার ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনীয়ি নিশ্চয়তাও এতে রয়েছে।