গত ৩ মে এনআরবি টেলিভিশনের নন্দিত উপস্থাপক ও সাহিত্য-উদ্যোক্তা সুব্রত কুমার দাসের পরিকল্পনা ও উপস্থাপনায় কানাডীয় বাঙালি লেখকদের নতুন বই নিয়ে একটি জাঁকজমকপূর্ণ লাইভ অনুষ্ঠিত হয়। রাইটারস ইউনিয়ন অব কানাডা এবং কানাডা কাউন্সিলের সহযোগিতায় এই লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। টরন্টো ছাড়াও অন্য সব শহরের লেখকেরা যুক্ত হন, সেগুলো হচ্ছে হ্যালিফ্যাক্স, মন্ট্রিয়ল, অটোয়া, ব্রাম্পটন, ওয়াটারলু ইত্যাদি। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, সুব্রত কুমার দাসই সম্ভবত একমাত্র বাঙালি লেখক যিনি রাইটারস ইউনিয়ন অব কানাডা এবং কানাডা কাউন্সিলের এমন সহযোগিতা লাভ করে থাকেন।
যে লেখকেরা তাঁদের নতুন বই নিয়ে এবারের আয়োজনে যুক্ত হন তাঁরা হলেন অতনু দাশ গুপ্ত, কাজী হেলাল, ড. জান্নাতুল নাইম, ভ্যালেন্তিনা অপর্ণা গমেজ, মম কাজী, মোস্তফা আকন্দ, মোস্তফা হক, রাকীব হাসান, রোকসানা পারভীন, এবং সুশীল কুমার পোদ্দার। এছাড়া যাঁদের নতুন প্রকাশিত বই নিয়ে আলোকপাত করা হয় তাঁরা হলেন পণ্ডিতজন দিলীপ চক্রবর্তী, বিশ্বপরিব্রাজক ঝর্ণা চ্যাটার্জী এবং গবেষক সুজিত কুসুম পাল। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই আনন্দময় আয়োজনে কানাডায় থাকা বিপুল সংখ্যক লেখক ও সাহিত্য-অনুরাগী নিয়মিতভাবে মন্তব্য করে অনুষ্ঠানকে উজ্জীবিত রাখেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বাংলাদেশ থেকে ২০১৩ সালে কানাডায় আসার আগেই প্রায় ত্রিশটি গ্রন্থের লেখক সুব্রত কুমার দাস বিভিন্ন সাহিত্য আয়োজনের সংগঠক ছিলেন। তাঁর উপস্থাপক পরিচয়টি প্রথম প্রকাশিত হতে শুরু করে আসার প্রায় চার বছর পর। ২০১৭ সালে এনআরবি টেলিভিশনে টরন্টো কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে শুরু করেন তিনি। তাঁর উপস্থাপনাতেই এনআরবি টেলিভিশনে দুর্গাপূজা, ঈদের নামাজ, বুদ্ধ পূর্ণিমা এবং বড়দিনের অনুষ্ঠানের প্রচার শুরু হয়।
আরও উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০২৩ সালের ২ জুলাই সুব্রত কুমার দাসের পরিকল্পনা ও উদ্যোগে এনআরবি টিভির প্লাটফর্মে কানাডায় থাকা ১৫ জন লেখকের নতুন বই নিয়ে অভূতপূর্ব এক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। পণ্ডিতজন ড. দিলীপ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সেই আয়োজনে বাঙালি লেখকদের অভিনন্দিত করেন টরন্টোর প্রাক্তন পোয়েট লরিয়েট বিশিষ্ট কবি এ. এফ. মরিৎজ। যে ১৫ লেখকের বই নিয়ে সেই আয়োজন ছিল তাঁরা হলেন, অতনু দাশ গুপ্ত, আকবর হোসেন, এলিনা মিতা, জসিম মল্লিক, জাকারিয়া মুহম্মদ ময়ীন উদ্দিন, তাসমিনা খান, দেবাঞ্জনা মুখার্জী ভৌমিক, ননীগোপাল দেবনাথ, বাদল ঘোষ, মামুনুর রশীদ, রোকসানা পারভীন শিমুল, শহীদ খোন্দকার, সুপর্ণা মজুমদার, সূচনা দাস, এবং স্বপন বিশ্বাস। আরও উল্লেখ করা যায় যে, ২০২৪ সালে ৭ মার্চ তারিখের সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় ‘মেলায় কানাডীয় বাঙালি লেখকদের বই’ শিরোনামে দুই পৃষ্ঠাজুড়ে এক বিশাল প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নেন সুব্রত। সেই প্রতিবেদনের লেখক ছিলেন কবি ও ঔপন্যাসিক বরুণ কুমার বিশ্বাস।
করোনা মহামারী শুরু হলে সুব্রত কুমার দাস কানাডা, বাংলাদেশ ও ভারতের বাঙালিদের সম্পৃক্ত করে লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে শুরু করেন। সাহিত্যিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি এনআরবি টেলিভিশনে শতাধিক লাইভ করেছেন মহামারীর দুই বছরে। কানাডার লেখকদের নিয়েও তিনি অতীতে লাইভ অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেছেন। ২০২২ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি তেমন এক আয়োজনে যে লেখকেরা যুক্ত ছিলেন তাঁর হলেন, এলিনা মিতা, কাজী হেলাল, গুরুপ্রসাদ দেবাশীষ, জসিম মল্লিক, জাভেদ ইকবাল, জামিল বিন খলিল, তাসরীনা শিখা, পারভেজ এলাহী চৌধুরী, বায়েজিদ গালিব, মানসী সাহা, মাসুদুল হাসান রনি, মোস্তফা আকন্দ, ড. শোয়েব সাঈদ, হোসনে আরা জেমী, লতিফুল কবির এবং হাসান জামান খান।
সম্প্রতি আয়োজিত লাইভ চলাকালে সুব্রত দার্ঢ্যকণ্ঠে বার বার বলেন, কানাডার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত বাঙালি লেখকদের এক সুতোয় সংযুক্ত করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন সকল কানাডীয় বাঙালি লেখক এবং সম্মানিত দর্শককে সুব্রত আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনলাইনে রেকর্ডকৃত অনুষ্ঠানটি দেখতে ক্লিক দিতে হবে এই লিঙ্কে – https://www.facebook.com/subratakdas/videos/1474532236471578