কেউ যদি অনলাইনে খুব বেশি সময় ব্যয় নাও করেন তাহলেও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের ভুল বার্তা দেখতে পাবেন যে, মানবস্বাস্থ্যের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্ষতিকর। সবচেয়ে বেশি যে দাবিটি করা হচ্ছে তা হলো মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তিতে তৈরি ভ্যাকসিন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। কেননা, এতে রয়েছে মাঙ্কি ভাইরাস ডিএনএ।
ভ্যাকসিনের কারণে ক্ষতির বিষয়ে গত বছর মার্কিন কংগ্রেসে শুনানিতেও এই দাবি আবারও করা হয়। যদিও উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো জোর দিয়ে বলেছে, কোভিড ভ্যাকসিন ও ক্যানসারের মধ্যে সম্পর্কের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। অথবা এমআরএনএ ভ্যাকসিন কোনোভাবে মানব ডিএনএর পরিবর্তন আনতে পারে।
কানাডিয়ান ক্যানসার সোসাইটির একজন জ্যেষ্ঠ নীতি বিশ্লেষকও এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, মিথ্যা এই বিশ^াসের বিপদ হচ্ছে, প্রমাণিত থেরাপির ব্যবহারও বিঘিœত হতে পারে এর ফলে।
অ্যাপিরামি জয়াপালান এক ইমেইল বিবৃতিতে বলেছেন, ভুল তথ্য ভ্যাকসিন গ্রহণে লোকজনকে দ্বিধায় ফেলে দিতে পারে। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা বিলম্বিত হতে পারে।
মূল কথা হচ্ছে, অনলাইন ও অন্যখানে চালু এ ধরনের ভুল তথ্য ক্যানসার রোগী ও অন্যদের সামনে পড়তে পারে, যা খুবই উদ্বেগের। মেডিকেল ও সায়েন্টিফিক কমিউনিটির একে অবজ্ঞা করা উচিত হবে না। এমনটাই বলেন হেলথ লিটারেসিতে বিশেষজ্ঞ একজন কানাডিয়ান বিজ্ঞানী।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ক্যানসার ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী শেরিল পিটারস বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যাওয়াটা একজন রোগীর জন্য খুবই নাজুক সময়। বিশেষ করে সেইসব রোগীদের জন্য, যারা বিভ্রান্তিকর উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের তথ্য যে প্রচারিত হচ্ছে এবং আমাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা যে এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মুখে পড়তে পারে সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকা উচিত। কারণ, তারা এসবে কান দিলে তা তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এ অবস্থায় কানাডিয়ান ক্যানসার সোসাইটি অসমর্থিত উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে।