গত বসন্তের কোনো একদিন টরন্টোর পশ্চিমের একটি বাড়িতে তল্লাশি চালান পিল পুলিশ বিভাগের মার্ক হেউড। তল্লাশিতে তিনি স্নোমোবাইল বোঝাই একটি সেমি-ট্রেইলার খুঁজে পান।
বাহিনীর কার্গো চুরি দলের প্রধান হেউড বলেন, পুরো কনটেইনারটিই নতুন স্কি-ডুতে ভর্তি ছিল, যার প্রতিটির আনুমানিক বাজারমূল্য ২৪ হাজার ডলার। সেই হিসাবে তার ইউনিটের জন্য এটাকে ভালো জব্দই বলতে হবে।
প্রজেক্ট বিগ রিগ শীর্ষক এই তদন্তের ফলে ১৫ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৭০ মিলিয়ন ডলারের সামগ্রী ভর্তি ২৮টি ট্রেইলার উদ্ধার করা হয়েছে। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে মুরগি থেকে শুরু করে টেলিভিশন ও স্লিম্যান বিয়ার।
এক সাক্ষাৎকারে হেউড বলেন, কার্গো চুরি নিশ্চিতভাবেই বাড়ছে।
প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পণ্য চুরির অপরাধ বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপাত্ত বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান কার্গোনেটের তথ্য অনুযায়ী, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে পরিবহনের সময় পণ্য চুরি বেড়েছে ৫৯ শতাংশ। ২০২৩ সালে পণ্য চুরির ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৮৫২টি। ২০২২ সালে পরিবহনের সময় পণ্য চুরি বেড়েছিল ১৫ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ২০ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রেইট ইয়ার্ডের বেড়া কেটে ও ট্রাক স্টপেজে হট-ওয়্যারিংয়ের মাধ্যমে চুরির পুরোনো পদ্ধতিও এখনো জনপ্রিয়। কিন্তু অনলাইন লোড বোর্ড থেকে সৃষ্ট তথ্যের মাধ্যমে এ ধরনের কাজের তথ্য প্রায়ই দেওয়া হয়। হেউড বলেন, এই পদ্ধতিতে হাতের কাছে যা মেলে তা-ই চুরি করা হয়। কিন্তু এখন যদি তারা কোনো কিছুর ভেতরের খবর পেয়ে যায় তাহলে তারা ইয়ার্ডে যাবে এবং নির্ধারিত পণ্যটি না পাওয়া পর্যন্ত অসংখ্য ট্রেইলার পরীক্ষা করে দেখবে। এরপর তারা সুনির্দিষ্ট পণ্যটি চুরি করবে।
টরন্টোভিত্তিক জেনস্যুরেনেস্র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দানিশ ইউসুফ বলেন, উদাহরণ হিসেবে অ্যাপল এয়ারট্যাগসের মতো ডিজিটাল ট্র্যাকিং ডিভাইসের মাধ্যমেও শিপমেন্টের জন্য পণ্য অথবা অবস্থান সম্পর্কিত ভেতরের তথ্য পাওয়া যায়। এ কাজে তারা আগের বছরের চেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে। কারণ, পদ্ধতিটি অনেক সহজ। এ ধরনের হ্যাকিং ব্যবস্থার খরচ খুবই কম। কারণ, এজন্য একজন ব্যক্তির তাদের বেজমেন্টের কোনো এক জায়গায় বসে থাকতে হয় শুধু।
কার্গোনেটের তথ্য অনুযায়ী, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গত বছর যে পরিমাণ কার্গো চুরি হয়েছে তার মূল্য ৪৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার, ২০২২ সালের তুলনায় যা ৪৭ শতাংশ বেশি।