রবিবার, মে ৫, ২০২৪
12.6 C
Toronto

Latest Posts

আসুন শরীফ রহমানের পরিবারের পাশে দাঁড়াই

- Advertisement -

গত ১৭ আগস্ট কানাডার ওয়েন সাউন্ড শহরের কেন্দ্রস্থলে ‘দ্য কারি হাউজ’ রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে বিল না দিয়ে চলে যাওয়ার সময় তিন দুর্বৃত্ত রেস্টুরেন্টের মালিক শরীফ রহমানের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, রেস্তোরাঁর বাইরে ফুটপাতে বকেয়া বিল নিয়ে সন্দেহভাজনদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন রহমান ও তার ভাগ্নে। রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে তাকে কয়েকদিন লাইফ সাপোর্টে রাখার পর মৃত্যু ঘটে।
গত ২৭ আগষ্ট রবিবার ছিল শরীফ রহমানের শেষকৃত্যের দিন। এদিন টরন্টো থেকে একশত নব্বই কিলোমিটার দূরের ওয়েন সাউন্ড শহরে যাই। প্রথমে সরাসরি হত্যাকান্ডের ঘটনাস্হল দ্যা কারি হাউসের দরজায় নিহতের স্মরণে পুস্পস্তবক রেখে আসি এবং হত্যাকান্ডের বিচার ও অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবী জানাই। তারপর স্হানীয় মসজিদে গিয়ে মরহুমের নামাজে জানাজায় অংশ নেই। সেখানে বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির শত শত মানুষের সাথে জানাজায় অংশ নেন স্হানীয় মেয়র ইয়ান বডি । জানাজা শেষে মেয়রের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। এরপরে সকলে রওয়ানা হই স্হানীয় কবরস্হানের দিকে। ঠিক তখনই ঘটে অভূতপূর্ব ঘটনা।

- Advertisement -

প্রায় শতাধিক গাড়ীর বহর নিয়ে আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছি শরীফ রহমানের মরদেহ নিয়ে, একই সময়ে রাস্তার দু’ধারে স্হানীয় হাজারো মানুষ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে রাস্তার দু’ধারে দাড়িয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে বুকের বাম পাশে হাত রেখে শ্রদ্ধা ও শোক জ্ঞাপন করেন, তখন অনেকের হাতেই বাংলাদেশী পতাকা নাড়তে দেখা যায়। টরন্টোর দূরবর্তী একটি শহরের মানুষ যে কত মহান, কতখানি শোক বিহবল, তারা নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধ একত্রিত হয়ে আমাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে জানিয়ে দেন যে তাদের শহরে ঘাতকদের স্হান নেই। গোট শহরবাসী এই ঘৃণ্য ঘটনাকে নিন্দা জানায়। স্থানীয় রিয়েলটর এবং পরিবারের বন্ধু মার্ক বারবোসা শুক্রবার সকালে সিবিসি লন্ডনকে বলেন, শরীফ রহমান একজন দয়ালু ব্যক্তি ছিলেন, যার মুখে সব সময় হাসি ছিল, তিনি শান্তিপূর্ণ, নম্র জীবন যাপন করতেন। তিনি যে কোনো বিষয়ে যে কাউকে সাহায্য করতেন এবং তার রান্নাঘরে গৃহহীনদের জন্য রান্না করতেন। তিনি সর্বদা তার সম্প্রদায়কে সাহায্য দিতেন এবং তাই এই ধরনের একজন শান্তিপূর্ণ ব্যক্তির সাথে এরকম ঘটনা চিন্তা করা যায় না।

শরীফ রহমানের বাড়ি সিলেট ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন বটেশ্বর এলাকায়। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে লন্ডনের গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম ফিল সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কানাডা চলে আসেন। ২০১৫ সালে ‘দ্যা কারি হাউজ’ নামে রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেন।

তার স্ত্রী শায়েলাও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। শরীফ রহমান তার ভাই, রেস্টুরেন্টে কাজ করা এক ভাতিজা, স্ত্রী এবং ছয় বছর বয়সী কন্যা রেখে গেছেন।
আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটির এই ঘটনায় চুপ করে বসে থাকা উচিত হবে না। আমরা লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করি নানা বিনোদনমূলক কাজে, এখন সময় আমাদের ঐক্য প্রদর্শন করার। আর কিছু না পারলেও আমাদের উচিত বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। কানাডার রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনকে জানানো যে আমরা ঐক্যবদ্ধ এবং দুস্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্হা করার জোর দাবী করা। এবং শরীফ রহমানের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। ইতিমধ্যেই গো ফান্ডে অনেকেই অর্থ সাহায্য করেছেন, আসুন সকলেই সাধ্যমত শরীফ রহমানের পাশে দাঁড়াই।

শরীফ রহমানের মৃত্যুতে বাংলামেইল ও এনআরবি টিভি পরিবার শোক প্রকাশ করছে।

- Advertisement -

Latest Posts

Don't Miss

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.