
১৯৯৮ সালের তুষার ঝড়ের সময় বিদ্যুৎবিহীন এক সপ্তাহ চলে যাওয়ার পর মন্ট্রিয়লের সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. সুজানে কিং আবিস্কার করেন, এই দুর্ভোগ তাকে কতটা ভুগিয়েছে। ওই ঘটনা মনে করে তিনি বলেন, আমি রক্ত দিতে গিয়েছিলাম এবং গিয়ে দেখলাম আমার রক্তচাপ অনেক বেশি। যদিও সাধারণত তা অনেক বেশি কম থাকে। আমি বুঝতে পারলাম যে, চাপে আছি। তাই গর্ভবতী নারীদের ওপর বাহ্যিক কারণে চাপের সৃষ্টি হলে গর্ভে থাকা সন্তানের ওপর তার প্রভাব কি হতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করতে চাইলেন তিনি।
নিজ বাড়ি থেকে গ্লোবাল নিউজকে তিনি বলেন, তুষার ঝড়টি ছিল আকস্মিক ঘটনা এবং গর্ভবর্তী নারীদের ওপর তা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
প্রিনাটাল স্ট্রেস ও শিশুদের ওপর তুষার ঝড়ে প্রভাব বুঝতে একদল গবেষকের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করলেন কিং। সেই সঙ্গে তুষার ঝড়ে মধ্যে জন্ম নেওয়া একদল শিশুদের ওপর নজর রাখতে থাকলেন, যাদের বয়স ছয় মাস থেকে ১৯ বছর। এর মধ্য দিয়ে তাদের বুদ্ধি, আচরণ, শারীরিক উন্নয়ন দেখতে থাকলেন। গবেষণায় দেখা গেলো, মায়েল দুর্ভোগ ও আবেগ তাদের সবক্ষেত্রেই বিশেষ করে শারীরিক গঠনে বেশি প্রভাব ফেলেছে।
তিনি বলেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে স্থুলতার ঝুঁকি বাড়ে। অর্থাৎ, ১৩ অথবা ১১ অথবা আট অথবা পাঁচ বছরের চেয়ে ১৫ বছরে প্রভাবটা বেশি স্পষ্ট হয়। এক্ষেত্রে জিনেরও একটা ভূমিকা রয়েছে এবং কোনটা বেশি সক্রিয় তা নির্ধারণে পরিবেশও সহায়তা করে থাকে।
এরপর তুষার ঝড়ে ভুমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের নিয়ে আর কোনো গবেষণা তিনি করেননি, যাদের বয়স ২৫ বছর। কিন্তু গর্ভবতী মায়েদের ওপর অন্যান্য সংকটের প্রভাব কি হতে পারে সেদিকে চোখ রাখছেন তিনি। এসব সংকটের মধ্যে রয়েছে বড় ধরনের বন্যা, অগ্নিকান্ড এবং অবশ্যই মহামারি।
তিনি বলেন, অবশ্যই এগুলোর একটা প্রভাব রয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের ওপর এর প্রভাব রয়েছে।
অন্য বিশেষজ্ঞরা এর সঙ্গে একমত হন যে, প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখালেও কিছু কিছু মানুষ দুর্যোগের সময় কিছুটা হলেও চাপের মধ্য দিয়ে যায়। সাইকোথেরাপিস্ট শার্লেট উইন্ট বলেন, অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে তাতে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেখায় শরীর। বুদ্ধি কিংবা আপনার যৌক্তিক মন দেখায় না। তাই লোকজনের উচিত চাপ কমানোর উপায় খুঁজে বের করা। জনস্বাস্থ্য বিভাগের মতো কর্তৃপক্ষের এক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে।