লং কোভিডে ভোগা কানাডিয়ানদের সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হাসপাতালে গমন বেড়ে গেছে। এর অর্থ হচ্ছে কানাডার রুগ্ন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সেবা গ্রহণে রোগীদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কানাডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ পরীক্ষায় রোগ শনাক্ত হওয়ার পর স্বাস্থ্যসেবা খাতের ওপর চাপ বেড়ে গেছে এবং নতুন স্বাস্থ্যনীতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, কানাডার প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক সরকার হিমশিম খাচ্ছে, সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীরা একে ব্যবস্থাটির সংকট হিসেবে দেখছেন।
গবেষণার প্রধান দুইজন লেখক বলেন, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাগুলো কত ভালোভাবে এটা সামাল দেবে তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ডা. ক্যান্ডেস ম্যাকনটন বলেন, আমরা যে খুব উদ্বেগের মধ্যে আছি সেটা বলাই শ্রেয়। পরিস্থিতি যা এবং শীতে আমরা যেদিকে এগোচ্ছি তা নিয়ে সব ইমার্জেন্সি চিকিৎসকই উদ্বেগে রয়েছেন বলে আমি মনে করি। বাড়তি চাহিদার ঢেউ নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন।
অন্টারিওর ৫ লাখের বেশি রোগীর উপাত্তের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রদেশভিত্তিক উপাত্তগুলো সংকলন করেছে অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিইএস।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার দুই মাস বা তার বেশি সময় পর লোকজন আক্রান্ত না হওয়া ব্যক্তিদের চেয়ে ঘনঘন হাসপাতালে যাচ্ছেন। ক্লিনিক, জরুরি বিভাগেও তারা বেশিবার যাচ্ছেন এবং বেশি সময় সেখানে অবস্থান করছেন। লং কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে নারীরা।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া প্রায় ১ শতাংশ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। আক্রান্ত হয়নি এমন ব্যক্তিদের তুলনায় এই ব্যক্তিরা এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় হাসপাতালে বাড়তি কাটাচ্ছে। সংখ্যাটি আপাতভাবে খুব বড় মনে না হলেও ২০২২ সালের গোড়ার দিকে আক্রান্তদের নিরিখে বিবেচনা করলে হারটি দাঁড়ায় মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ। এই ১ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তি কোভিড-পূর্ব সময়ে হাসপাতাল দিবসের ৭ শতাংশ ব্যবহার করছে বলে জানান ম্যাকনটন। তিনি বলেন, ওই সময়ের তুলনায় লোকবলসহ খুব কম হাসপাতাল শয্যা রয়েছে আমাদের।
এছাড়া মহামারির আগে যেসব পারিবারিক চিকিৎসক বছরে ২০ জন রোগীর বাড়ি যেতেন এখন তাদের যেতে হচ্ছে ১০০ জনের বাড়িতে।