
বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো অবস্থায় রয়েছে বলে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা তাদের উপাত্তে জানিয়েছে। এর ফলে ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার আরেক দফা বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কানাডার মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল যেখানে ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
বিএমওর প্রধান অর্থনীতিবিদ ডগলাস পর্টার বলেন, ৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সংস্থাটির প্রাথমিক প্রাক্কলন ৪ দশমিক ৬ শতাংশের চেয়ে কম হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে একে গড়ের চেয়ে ভালো বলতে হবে।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্সি ফার্ম আরএসএম কানাডার অর্থনীতিবিদ টু নিগুয়েন বলেন, জিডিপির উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখলে সেখানে আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু বিষয় পাওয়া যাবে। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসায় শক্তিশালী বিনিয়োগ হয়েছে, পরিবারগুলোর ব্যয় বেড়েছে। তবে এতে আশ্চর্য হওয়ার মতো খুব বেশি কারণ নেই। কারণ, মহামারির সময় পরিবারগুলোর ব্যয় পড়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে আবাসন খাতকে আমরা খুব ভালো করতে দেখছি না, গত মার্চে প্রথমবার সুদের হার বৃদ্ধির পর যা শুরু হয়।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রকৃত জিডিপি বেড়েছে দশমিক ৮ শতাংশ। এ নিয়ে টানা চার প্রান্তিক প্রবৃদ্ধির দেখা পেলো কানাডার অর্থনীতি।
মাসিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা। সেখানে জুনের প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে দশমিক ১ শতাংশ। মে মাসে যেখানে প্রবৃদ্ধি ছিল না।
পর্টার বলেন, সাম্প্রতিক জিডিপি উপাত্ত মিশ্র উপাত্ত। এখানে কিছু খাতের দুর্বলতা দেখা গেলে অন্য খাতগুলো ভালো অবস্থায় রয়েছে। আমরা মনে হয়, অর্থনীতি যে কতটা অস্থিতিশীল, এটা সেটাই নির্দেশ করছে। এবং একে একটা সরল রূপ দেওয়া সহজ নয়।
প্রতিবেদন বলছে, ব্যবসাগুলো তাদের ইনভেন্টরিতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে, যা প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৌশল কাঠামো এবং মেশিনারি ও যন্ত্রপাতিতেও বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। একই সময়ে আধা-স্থাবর সম্পত্তিতে পরিবারগুলো তাদের ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ, লোকজন অফিসে ফিরতে শুরু করায় পোশাক-আশাক ও জুতা ক্রয়ে ব্যয় বেড়েছে। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকেও আবাসনে বিনিয়োগও হ্রাস পেয়েছে। হ্রাস পেয়েছে স্থাবর সম্পত্তিতে বিনিয়োগও।
কানাডার অর্থনীতিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির অর্থনীতি উল্লেখ করে মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একাধিকবার সুদের হার বাড়িয়েছে ব্যাংক অব কানাডা। এর ফলে অর্থাৎ, ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি অর্থনৈতিক কর্মকা- শ্লথ করবে এবং চূড়ান্তভাবে মূল্যস্ফীতি তাদের ২ শতাংশের লক্ষ্যের মধ্যে চলে আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।