
কোভিড-১৯ মহামারি মানুষকে অনলাইনের দিকে ঠেলে নিয়ে গেছে এবং এর সঙ্গে যৌন হয়রানি বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক রয়েছে। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার সাম্প্রতিক উপাত্ত এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কর্তৃপক্ষগুলো অনলাইনে যৌন অপরাধ বিষয়ে তরুণ ও পিতা-মাতাকে শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও আরও বিধিনিষেধ, শিক্ষা ও আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভুক্তভোগী দাবি না মানতে চাইলে কেউ যখন তাদের ব্যক্তিগত বিশেষ করে যৌনতা সম্পর্কিত বিষয় অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তখন তাকে সেক্সুয়াল এক্সটরশন বা সেক্সটরশন বা যৌন নিপীড়ন বলা হয়ে থাকে। এই হুমকি দেওয়া হয় সাধারণ অর্থ আদায়ের উদ্দেশে।
এ ধরনের অপরাধ জাতীয়ভাবে প্রথমবারের মতো নজরে আসে এক দশক আগে, যখন আমান্দা টড নামে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার পোর্ট ককিটলামের ১৫ বছর বয়সী এক তরুণীর একটি ভিডিও পোস্ট করার পর সে আত্মহত্যা করে। ১ কোটি ৪০ লাখবার ভিডিওটি দেখা হয়। তাকে নিপীড়নকারী ডাচ নাগরিক আইদিন কোবানের বিচার জুনে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়।
আইদিন নিপীড়ন, হয়রানি, যৌন অপরাধ সংঘটনে কোনো তরুণের সঙ্গে যেযাগাযোগ এবং শিশু পর্ণগ্রাফি রাখা ও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। টডের মৃত্যুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়নি। পাঁচটি অভিযোগেই শনিবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন জুরিরা।
কানাডান সেন্টার ফর চাইল্ড প্রটেকশনের সহযোগী নির্বাহী পরিচালক সাইনি আরনাসন বলেন, ২০১২ সালের অক্টোবরে টড আত্মহননের পথ বেছে নেওয়ার পর থেকেই এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এখন এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
তরুণদের উদ্দেশ্য করে যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে দেশব্যাপী সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ। নোভা স্কশিয়া আরসিএমপির ইন্টারনেট চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশন ইউনিটের করপোরাল মার্ক সোবিয়েরাজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সন্তানদের সঙ্গে কথা বলুন, যাতে করে আপনারা সাহায্য করতে পারেন।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার উপাত্ত অনুযায়ী, পুলিশের খাতায় নথিভুক্ত অনলাইনে যৌন নিপীড়নের ঘটনা গত এক দশকে ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। তবে এ ধরনের অপরাধ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মহামারির সময়। সম্মতি না নিয়ে শিশু ও বয়স্কদের অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশের ঘটনা ২০২১ সালে ১৯৪টি বেড়েছে। এক বছর আগের তুলনায় এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ এবং পাঁচ বছর আগের তুলনায় ৫২ শতাংশ।