
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভুত নতুন বাস্তবতায় কানাডার সশস্ত্র বাহিনীকে আরও সুসজ্জিত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি। গত শুক্রবার ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর মাঙ্ক স্কুল অব গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসিতে বক্তব্য দানকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বৈশি^ক পর্যায়ে নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভুত হয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর ভালোভাবে সুসজ্জিত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা জরুরি কারণ, বিশ^ বদলে গেছে এবং নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সামর্থ আমাদের থাকা উচিত। জার্মানি যা করেছে, আমরাও তা করতে পারি। জার্মানি তাদের সামরিক বাজেট বাড়িয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমার মনে হয়, আমাদেরও সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে কাজ করা উচিত, যাতে করে আমাদের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে পারি।
রাশিয়া আরও কোনো আগ্রাসন চালাতে চাইলে তা মোকাবেলায় ন্যাটো ও কানাডা প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেন জোলি।
এদিকে আগামী ফেডারেল বাজেটে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বরাদ্দ বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে সামরিক ব্যয় তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের ২ শতাংশে উন্নীত করা। যদিও ২০২১ সালের মোট দেশজ উৎপাদনের ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করেছে কানাডা।
জোলি বলেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ পশ্চিমা দেশগুলোকে আগের মতো ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং ন্যাটো জোটের শক্তি বাড়িয়েছে। ঐক্যের বিরুদ্ধে একজন কুচক্রীর মতো কোনো বিষয় এখানে নেই। প্রেসিডেন্ট পুতিন পশ্চিমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তার ফায়দা তুলতে চাইছেন। কিন্তু আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমরা এখন বেশি ঐক্যবদ্ধ। ইউক্রেনে সামরিক সরঞ্জাম পাঠাতে জি৭ ও ন্যাটোর সঙ্গে কাজ করছে কানাডা। নিজেদের রক্ষার ব্যাপারে ইউক্রেনীয়দের সক্ষমতা তৈরি ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমাবর্ষণ বন্ধ করা এখন গুরুত্বপূর্ণ। কূটনৈতিক দিক থেকেও এর একটা প্রভাব আছে। কারণ, আলোচনার টেবিলে ইউক্রেনের শক্তিশালী হওয়ার এটা একটা উপায়।
ফেডারেল সরকার যে বিপুল সংখ্যক ইউক্রেনীয় শরনার্থীকে কানাডায় আনতে আগ্রহী সেটিও পুনর্ব্যক্ত করেন জোলি। পাশর্^বর্তী ইউরোপীয় দেশ থেকে বিমানে করে তাদের কানাডায় আনার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখছেন কর্মকর্তারা।
মলদোভা, রোমানিয়া ও পোল্যান্ডের মতো যেসব দেশ ইউক্রেনীয় শরনার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে জাতিসংঘের মাধ্যমে তাদেরকে তহবিল দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান জোলি। তিনি বলেন, মানবিক সহায়তা বাবদ আমরা ২০ কোটি ডলার দিয়েছি। আমরা জাতিসংঘ ও এর বিভিন্ন সংস্থা যেমন ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করছি। মলদোভাকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে। কারণ, ইউরোপের অন্যতম দরিদ্র দেশ এটি।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের প্রথম ২৩ দিনে ৩৫ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন।