বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কয়েক বছর ধরেই ঢাকা থেকে কানাডার টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট চালুর কথা বলে আসছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ২৬ মার্চ থেকে টরন্টো ফ্লাইট শুরু হতে যাচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন না করেই বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে। তাই ওই দিন একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট যাবে। নিয়মিত ফ্লাইট কবে শুরু হবে, সেটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
পরে এ বিষয়ে কথা হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সঙ্গে। তিনি গত রোববার বলেন, টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে কানাডীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টরন্টো বিমানবন্দরে বোর্ডিং সিস্টেম অটোমেশন–প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও ১২ সপ্তাহ লাগবে।
বিমানের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বিমান কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত টরন্টোতে অফিস নিতে পারেনি। সেখানে জিএসএ (জেনারেল সেলস এজেন্ট) নিয়োগ, বোর্ডিং সিস্টেম অটোমেশন প্রক্রিয়াসহ কিছু কার্যক্রম বাকি আছে। এসব কার্যক্রম শেষ করে টরন্টো ফ্লাইট পরিচালনা করতে অন্তত জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গত সপ্তাহে কানাডার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) জানিয়েছে, বোর্ডিং সিস্টেম অটোমেশন–প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কমপক্ষে আরও ১২ সপ্তাহ সময় লাগবে।
এই অবস্থায় ২৬ মার্চ থেকে টরন্টো ফ্লাইট চালু কীভাবে সম্ভব এবং দ্বিতীয় ফ্লাইটটি কবে যাবে, সেটা বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালের কাছে ৭ মার্চ লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এর জবাব পাওয়া যায়নি।
পরে এ বিষয়ে কথা হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সঙ্গে। তিনি গত রোববার প্রথম আলোকে বলেন, টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে কানাডীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টরন্টো বিমানবন্দরে বোর্ডিং সিস্টেম অটোমেশন–প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও ১২ সপ্তাহ লাগবে। এ ছাড়া জিএসএ নিয়োগ হয়নি। এ কারণে এখনই টরন্টোতে নিয়মিত ফ্লাইট শুরু করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘২৬ মার্চ আমরা অবশ্যই টরন্টোতে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করব।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ৭ মার্চ এক চিঠিতে জানা যায়, ২৬ মার্চ ওই ফ্লাইটে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, একজন উপসচিব, প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব, মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা, বিমানের একজন পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক টরন্টো যাবেন। টরন্টোতে বিমানের কার্যালয় ভাড়া করা ও জিএসএ নিয়োগ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে কানাডার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করার উদ্দেশে তাঁরা সেখানে যাচ্ছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
বিমানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২৬ মার্চ টরন্টোতে বোয়িং-৭৮৭ উড়োজাহাজ দিয়ে যে ফ্লাইটটি পাঠানো হবে, সেটি পরীক্ষামূলক। তিনি বলেন, ‘নতুন কোনো গন্তব্যে ফ্লাইট শুরু করতে বিমানের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগ ও গ্রাউন্ড সার্ভিস বিভাগের পরিদর্শনে যাওয়া উচিত। জিএসএ নিয়োগ, নিজস্ব অফিস ঠিক করার কাজে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জনসংযোগ ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তার পরিদর্শনে যাওয়ার কোনো যুক্তি নেই।’
টরন্টো ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতির বিষয়ে কথা হয় বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, টরন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে বেবিচকের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। তবে বিমানের প্রশাসনিক কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে বিমানকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।