মাঝরাতে যখন গাড়ির হেডলাইটটি জ¦লতে দেখেন তখনই মারিয়াম আলী বুঝে গিয়েছিলেন ঘটনা ভালো নয়। তখনই তিনি দৌঁড়ে এসে দুই গারি চোরের মুখোমুখি হন এবং চিৎকার শুরু করেন।
তার সার্ভিল্যান্স ভিডিওতে চোরদের পালিয়ে যেতে দেখা যায়। চুরির বিরুদ্ধে একে ছোটোখাটো একটা বিজয়ই বলা যায়। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদেরও বিশ্বাস, তারা কিছু একটা খুঁজে পেয়েছেন, যা দিয়ে নতুন নিরাপত্তা আদর্শমানের বিরুদ্ধে লড়া যেতে পারে।
অন্টারিওর পিকারিংয়ে তার বাড়িতে বসে সিটিভি নিউজ টরন্টোকে আলী বলেন, আমি আমার গাড়িতে আলো দেখতে পাই। তখনই আমার মাথায় কিছু একটা কাজ করে। মনে মনে বলি, এটা আমার সঙ্গে ঘটছে না। সে সময় খুব রাগ হয়। আমি খুবই রেগে গিয়েছিলাম।
আরেকটি ভিডিওতে চোরদের নেবারহুডে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এরপর আলীর লেক্সাস গাড়িটির কাছে আসে। চালকের আসনে যাওয়ার বদলে চোরেরা হেডলাইটকে লক্ষ্যে পরিণত করে এবং এর তারে প্রবেশের চেষ্টা করে। একটি হেডলাইট জ¦লে ওঠার পরই চোরের হুইলের পেছনে বসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ঠিক সেই সময় ঝড়ের গতিতে বাইরে থেকে সেখানে হাজির হন।
ডারহাম অটোহাউজের রায়ান জয়পাল বলেন, যে কৌশলটি তারা ব্যবহার করেছে সেটি ক্যান ইনজেকশন আক্রমণ নামে পরিচিত। চোরের কারের হেডলাইটের তারের নাগাল পাওয়ার পর তা গাড়ির কন্ট্রোলার এরিয়া নেটওয়ার্কে বার্তা পাঠায়।
ডিজিটালভাবে নিয়ন্ত্রিত এই সেন্ট্রাল হাব চোরেদের গাড়ির অন্যান্য যন্ত্রাংশকে কমান্ড দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। গাড়ি আনলক করা এর মধ্যে অন্যতম। গাড়ির ভেতরে থাকা ক্যান ওয়্যারের মধ্য দিয়ে তারা সফটওয়্যার প্রবেশ করায়। এরপর তা হ্যাক করে।
এটা সেই ধরনের আক্রমণ, যাতে গাড়িকে অনেকটা কম্পিউটারের মতো বিবেচনা করা হয়। এটা ইমমোবিলাইজারকে ফাঁকি দেয়। ইমমোবিলাইজার চাবি ছাড়া গাড়ি চালু হওয়া প্রতিরোধ করে। এখন পর্যন্ত ইমমোবিলাইজারই গাড়ি চুরি প্রতিরোধে সবচেয়ে সফল উদ্ভাবন। ২০ বছর কানাডায় এটি বাধ্যতামূলক করার পর গাড়ি চুরি ব্যাপক হ্রাস পায় বলে প্রাদেশিক উপাত্তে বলা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে চুরি আবার বেড়ে গেছে। সমস্যাটি সমাধানে গত সপ্তাহে অটোয়াতে জাতীয় সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়েছে।