বিখ্যাত নায়িকা এবং পরিচালক অরুণা বিশ্বাসের প্রথম পত্রিকায় নিউজ করে ছিলাম আমি। ঘটনাটা একটু অন্য রকম। খুলেই বলি।
অনেক দিন আগের কথা। তখন আমি মাঝে মধ্যে সাপ্তাহিক চিত্রালীতে কাজ করি। কাজ করি মানে ‘খ্যাপ মারি’। ফারুখ ফয়সলের তত্ত্বাবধানে কখনো সাহিত্য পাতায়, কখনো শিল্প-সংস্কৃতি বিভাগ রিপোর্ট করি।
আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলো- যাত্রাশিল্পের সম্রাট অমলেন্দু বিশ্বাসের একটি ইন্টারভিউয়ের জন্য। আমি তাঁর বাসা ১১৫ পশ্চিম ধানমন্ডি যাই। তখন অরুণা ভারতেশ্বরী হোমসে পড়ে। ছুটিতে বেড়াতে এসেছে। আমি ড্রইয়িং রুমে বসে আছি। কিশোরী অরুণা এসে উল্টো আমারই ইন্টারভিউ নেয়া শুরু করলো। একি কাণ্ড!
অরুণা তখন নৃত্যশিল্পী হিসেবে ফুটি ফুটি করছে। ওর বাবার ইন্টারভিউয়ের পাশাপাশি ছোট্ট একটা রিপোর্ট করি- ‘তা তা থই থই অরুণা বিশ্বাস’। তারপর থেকে ও আমার বন্ধু এবং সংস্কৃতি জগতের পুরনো বন্ধু। তুই-তুক্কারি, গালাগালাস, দ্বিমত, বিরোধ, ঝগড়াঝাটি, কথা কাটাকাটি, কথা বন্ধ কোনোটাই বাদ যায়নি। কানাডায় এসে আমরা প্রতিবেশি হলাম। অরুণা দেশে চলে গেলেও মাসি মা জোছনা বিশ্বাস আর ছোটভাইটি মিঠু বিশ্বাস দেখা হলেই ছেলের মতো, ভাইয়ের মতো মনে করে।
অরুণা আমার চেয়ে অনেক বেশি সামাজিক, আন্তরিক। আমার মেয়ের খবর, মার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তেরো হাজার কিলো মিটার দূর থেকে আনন্দ-বেদনা প্রকাশ। আমি অতটা পারিনা। এমন কি ১ আগস্ট ওর জন্মদিনেও শুভেচ্ছা জানানো হয়ে উঠে না।
অরুণার পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘অসম্ভব’ মুক্তি পেলো। ও উচ্ছ্বিত হয়ে ফোন করে বললো- দোস্ত, তুই ছবিটা দেখবি এবং লিখবি।
ছবিটা দেখা হয়নি। ইচ্ছে আছে- দেশে গিয়ে দেখবো। ইতোমধ্যে অরুণা জাতীয় পর্যায়ে ‘শিল্পকলা পদক ২০২২’ পাচ্ছেন। বিলম্বে হলেও অরুণাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।