পিটার নিগার্ডকে দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘কি টু দ্য সিটি’ প্রত্যাহার করেছে উইনিপেগ। সাবেক এই ফ্যাশন মোগোল যৌন হয়রানীর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিল সভায় নরবার্ট-সেইন রিভারের কাউন্সিলর মার্কাস চেম্বারস বলেন, নিগার্ড এই সম্মাননা পান ২০০৮ সালে। এরপর তিনি মেয়র স্কট গিলিংহামের কাছে জানতে চান নিগার্ডের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক রায়ের পর এই সম্মাননার পবিত্রতা রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
নিগার্ড ১৯৬৭ সালে উইনিপেগে একটি ফ্যাশন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, পরবর্তী যা নিগার্ড ইন্টারন্যাশনাল হয়ে ওঠে। যৌন হয়রানি ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, যেগুলো বর্তমানে বিচারাধীন।
চেম্বারসের প্রশ্নের উত্তরে গিলিংহাম বলেন, রায়ের আলোকে তিনি সিটির প্রটোকল অফিসারকে কি সম্মাননাপ্রাপ্তদের তালিকা থেকে নিগার্ডের নাম ছেটে ফেলতে বলেছেন।
গিলিংহামের একজন মুখপাত্র ২৫ নভেম্বর এক ইমেইলে জানান, এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে নিগার্ডের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আরও যেস ব ব্যক্তি উইনিপেগের কি টু দ্য সিটি সম্মাননা পেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন জ্যোতির্বিদ ক্রিস হ্যাডফিল্ড এবং ফার্স্ট নেশন্স চাইল্ড অ্যান্ড ফ্যামিলি কেয়ারিং সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ব্ল্যাকস্টক।
২৩ নভেম্বরের কাউন্সিল সভায় মেয়রের জন্য বরাদ্দ প্রশ্নোত্তর পর্বে চেম্বার বলেন, উইনিপেগের সর্বোচ্চ সম্মাননা হচ্ছে ‘কি টু দ্য সিটি’। এর অর্থ হচ্ছে সেইসব নাগরিক যারা আমাদের ন্যায্য সিটির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ কাজ করেছেন বা অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি আস্থা এবং সম্মান দেখানো। নিগার্ডের সাম্প্রতিক রায় এবং নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা অন্যান্য আইনি ঝামেলা ‘কি টু দ্য সিটি’ সম্মাননা যে বিশ^াস ও সম্মানের প্রতিনিধিত্ব করে তাতে প্রশ্ন চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন। সম্মাননা প্রত্যাহার নিগার্ডের যৌন হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেবে।
গিলিংহাম বলেন, আমরা এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। কি টু দ্য সিটি সর্বোচ্চ সম্মাননা, যা আমরা কাউকে দিয়ে থাকি।
নিগার্ড যৌন হয়রানির চার কাউন্ট অভিযোগে এ মাসের গোড়ার দিকে অন্টারিওর একটি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন। পঞ্চম কাউন্ট অভিযোগ থেকে তিনি অব্যাহতি পান। জোরপূর্বক আটকে রাখার আরেকটি অভিযোগ থেকেও নিষ্কৃতি পান। ১৯৮০ এর দশক থেকে শুরু করে ২০০০ এর মাঝামাঝি সময়ে অভিযোগগুলো করা হয়।
বিচার চলাকালে পাঁচজন নারী এই সাক্ষ্য দেন যে, ভ্রমণ থেকে শুরু করে চাকরির সাক্ষাৎকারের অজুহাতে নিগার্ডের সদরদপ্তর টরন্টোর ১ নায়াগ্রা স্ট্রিটে ডাকা হয়। তাদেরকে সর্বোচ্চ তলার একটি বেডরুম স্যুটে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চারজনই যৌন হয়রানির শিকার হন।
আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এ মাসের শেষের দিকে তার সাজা ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের কোনো সুযোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিগার্ডের আইনজীবীরা।