নয়া দিল্লি কূটনৈতিক সুরক্ষা বাতিল করায় ভারত থেকে অধিকাংশ কূটনীতিক প্রত্যাহার করেছে কানাডা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি ১৯ অক্টোবর এই তথ্য জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রত্যাহারে অভিবাসীদের আবেদন প্রক্রিয়াকরণ ঝিমিয়ে পড়বে এবং কানাডা ভারত অঞ্চলে ট্রাভেল অ্যাডভাইজরি জারি করেছে। ভারতে কনস্যুলার কর্মী কমিয়ে আনতে তারা বাধ্য হয়েছে বলেও জানিয়েছে কানাডা।
মেলানি জোলি বলেন, ২০ অক্টোবর থেকে নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে নয়া দিল্লি। যেসব দেশে কূটনীতিকদের নিযুক্ত করা হয় সেসব দেশ তাদেরকে বিশেষ অধিকার ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে। ভারতের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় হিসেবে কানাডা সেদেশে নিযুক্ত ৪১ জন কূটনীতিককে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের ওপর নির্ভরশীল ৪২ জনকেও দেশে ফিরতে বলা হয়েছে। এর ফলে ভারতে কর্মরত থাকছেন মাত্র ২১ জন কূটনীতিক।
এই হুমকিকে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী এই হুমকিকে আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেন জোলি। কারণ, এর ফলে কূটনীকদের সেখানে অবস্থান করা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। কানাডা এর পাল্টা পদক্ষেপ নেবে না বলেও জানান তিনি।
অটোয়াতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জোলি বলেন, একতরফাভাবে কূটনীতিকদের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা প্রত্যাহার আন্তর্জাতিক আইনের বিপরীত। এটা কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারে জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটা অযৌক্তিক। নয়া দিল্লিতে কানাডার দূতাবাসের কার্যক্রম চালু থাকবে। তবে চন্ডিগড়, মুম্বাই ও ব্যাঙ্গালোরে কানাডিয়ান কনস্যুলেটে স্বশরীরে সেবাদান বন্ধ থাকবে।
২০ অক্টোবর বিকালে হালনাগাদকৃত কানাডার ভ্রমণ পরামর্শে এসব নগরী ও এর আশপাশে কানাডিয়ানদের উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। কারণ, স্বশরীরে কনস্যুলার সেবাদান সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার বলেছেন, কর্মী সংখ্যা হ্রাসের ফলে ভিসা ও পারমিট প্রক্রিয়াকরণ বিঘিœত হবে। এর প্রভাব পড়বে ভারতীয় আবেদনকারীদের ওপর। আবেদনকারীদের আবেদন প্রক্রিয়াকরণে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। এ ছাড়া কোনো প্রশ্ন থাকলে তার জবাব পেতেও দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হতে পারে।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় শিখ নেতা হত্যার সঙ্গে ভারত সরকারের বিশ্বাসযোগ্য সম্পৃক্ততার ব্যাপারে কানাডিয়ান গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য থাকার কথা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত মাসে ঘোষণা করার পর থেকে নয়া দিল্লির সঙ্গে অটোয়ার সম্পর্ক হিমঘরে চলে গেছে।
কানাডা ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনা নিয়ে আর কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি জোলি। এমনকি এ ধরনের আলোচনা হয়েছে কিনা তাও জানাননি তিনি। জোলি বলেন, আমি বিশ^াস করি, কূটনীতিতে অনেক কিছু থাকে। তাই কূটনৈতিক বিষয় গোপন থাকাটাই ভালো।