
গত কয়েক মাস ধরে কর্ম হারানোর পর আগস্টে বেকারত্বের হার বেড়েছে। সুদের হার বৃদ্ধির মধ্যে অর্থনীতিতে যে মন্থরতা শুরু হয়েছে এটা তারই ইঙ্গিত।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তাদের সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে বলেছে, আগস্টে কানাডায় বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। সাত মাসের মধ্যে বেকারত্বের হার বৃদ্ধির ঘটনা এটাই প্রথম। আগস্টে বেকারত্বের এ হার জুলাইয়ের ৪ দশমিক ৯ শতাংশের তুলনায় বেশি। ১৯৭৬ সালে বেকারত্বের গণনা শুরু হওয়ার পর এটাই ছিল এর সর্বনি¤œ হার।
বিএমওর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সল গুয়াতিয়েরি বলেন, বছরের প্রথমার্ধে যথেষ্ট শক্তি দেখানোর পর অর্থনীতিতে কিছুটা দুর্বলতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। কয়েক মাস আগ পর্যন্তও অর্থনীতি যথেষ্ট ভালো করছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
সার্বিকভাবে কানাডার অর্থনীতি আগস্ট কর্ম হারিয়েছে ৪০ হাজার। এর মধ্যে বেশি চাকরি খোয়া গেছে সরকারি খাতে। গত তিন মাসে কানাডায় চাকরি খোয়া গেছে মোট ১ লাখ ১৪ হাজার। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার প্রতিবেদন বলছে, পেশাজীবী, বৈজ্ঞিানিক ও কারিগরী সেবা খাতে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হয়েছে শিক্ষা সেবা এবং নির্মাণ খাতে খোয়া গেছে তার চেয়ে বেশি। যদিও সিআইবিসি বলছে, শিক্ষা খাতে যে পরিমাণ চাকরি খোয়া গেছে তা মৌসুমি চ্যালেঞ্জের কারণে এবং পরবর্তীতে তা ফিরে আসতে পারে।
মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার বৃদ্ধি করায় অর্থনীতির গতিবিধির ওপর নজর রাখছে তারা। সবশেষ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর বেঞ্চমার্ক সুদের হার ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। সুদের হার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অর্থনীতিতে শ্লথগতি আসবে এমনটাই প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংক অব কানাডা বলছে, মূল্যস্ফীতি এখনও অনেক বেশি এবং সুদের হার বৃদ্ধির চক্রে ইতি টানার জন্য তা যথেষ্ট নয়।
সিআইবিসির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ এন্ড্রু গ্র্যান্থাম বলেন, অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকের আগে আরেকটি শ্রমশক্তি জরিপ রয়েছে এবং আরও একবার সুদের হার বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগস্টে কর্ম হারানোর বড় অংশই নারী, যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৪ এবং ৫৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। তবে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ মোটামুটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আগস্টে ঘণ্টাপ্রতি গড় মজুরি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। জুলাইয়ে এ বৃদ্ধির হার ছিল যেখানে ৫ দশমিক ২ শতাংশ
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা সতর্ক করে দিয়ের বলেছে, কানাডিয়ানদের অনেকে অবসরের বয়সসীমায় চলে যাওয়ায় নিয়োগদাতাদের কর্মী নিয়োগের চ্যালেঞ্জ অব্যাহত থাকতে পারে। গত বছর অবসরে নেওয়ায় আগস্টে চাকরি ছেড়েছেন ৩ লাখ ৭ হাজার কানাডিয়ান। এক বছর আগে সংখ্যাটি ছিল ২ লাখ ৩৩ হাজার।