অন্টারিওর ক্ষমতাসীন প্রোগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি নির্বাচনী আইন সংস্কারের যে প্রস্তাব এনেছে তার সমালোচনা করেছে বিরোধীদল। তাদের অভিযোগ, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় সরকারের যে ব্যর্থতা তা নিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতেই এ প্রচেষ্টা। যদিও সরকারের দাবি, তৃতীয় পক্ষের বিজ্ঞাপন সীমিত করা ও ভোটারের অংশগ্রহণ বাড়ানোই এর লক্ষ্য।
অ্যাটর্নি জেনারেল ডগ ডাউনি ২৫ ফেব্রুয়ারি বিলটি উপস্থাপন করেন। বিলে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন বাবদ ছয় মাসে ৬ লাখ ৩৭ হাজার ২০০ ডলার ব্যয়ের যে বিধান তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে এ ব্যয় তারা নির্বাচনের আগে ছয় মাসের পরিবর্তে এক বছরে করতে পারবে।
এক সাক্ষাৎকারে ডগ ডাউনি বলেন, অন্টারিওই একমাত্র প্রদেশ যেখানে তৃতীয় পক্ষকে হাজার নয়, মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। এটা নিয়ে অন্টারিওর নির্বাচন কমিশন যে চিন্তিত সেটিও আমরা অবগত।
অন্টারিও গ্রুপ, ওয়ার্কিং ফ্যামিলিজ কোয়ালিশনের মতো তৃতীয় পক্ষের সংস্থা নির্বাচনী প্রচারণা-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাম্প্রতিক প্রাদেশিক নির্বাচনী তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে তৃতীয় পক্ষের বিজ্ঞাপনী সংস্থার মাধ্যমে ৫০ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছে। ২০২২ সালের স্প্রিংয়ে প্রদেশের পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
তৃতীয় পক্ষের প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দলের মধ্যকার সংযোগও কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধনীতে। এ ব্যাপারে ডাউনি বলেন, আমরা চাই স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা। আমরা যখন তৃতীয় পক্ষের ব্যয় নিয়ে কথা বলছি তখন তথ্য বিনিময় ও বিদেশি উৎস থেকে প্রাপ্ত তহবিলের ব্যবহারের বিষয়েও সুনির্দিষ্ট নিয়ম থাকা দরকার।
সংশোধিত আইনে ব্যক্তিগতভাবে কোনো দল ও পার্থীকে বছরে ১ হাজার ৬৫০ ডলারের পরিবর্তে ৩ হাজার ৩০০ ডলার অনুদান দেওয়া যাবে।
তবে তৃতীয় পক্ষের বিজ্ঞাপনী ব্যয় সীমিত করার পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা তারাস নাত্যশক। তিনি বলেন, লং-টার্ম কেয়ার হোমের বিভীষিকা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা, স্বাস্থ্য সংগঠনের নেতারা যখন মুখ খুলতে শুরু করেছে, তখন ফোর্ড সরকার তাদেরকে চুপ করিয়ে দিতে চাইছে।
ভোটপ্রতি ভর্তুকি অব্যাহত রাখার মতো বিলের কিছু বিষয়কে সমর্থন করলেও ব্যক্তিগত অনুদান সীমা বাড়ানোর মধ্যে সমস্যা দেখছেন গ্রিন পার্টির নেতা মাইক শ্রেইনার। এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে অর্থের বিনিময়ে রাজনীতির দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
আগাম ভোট দেওয়ার সময় ৫ দিনের পরিবর্তে ১০ দিন করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিলে। জনগণ যাতে সহজে ও নিরাপদে ভোট দিতে পারেন সেটা নিশ্চিত করাই এর উদ্দেশ্য বলে জানান ডগ ডাউনি।
প্রদেশের আইন প্রণেতাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়টিও প্রথমবারের মতো খোলাসা করা হয়েছে বিলটিতে। এছাড়া কোনো ব্যক্তি ও সংগঠন নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করলে যাতে তাদের শাস্তি দেওয়া যায় সেজন্য ইলেকশনস অন্টারিওর আইন প্রয়োগের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধনীতে।