
মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার চেষ্টার পাশাপাশি আরেকটি লড়াইয়েও নামতে হচ্ছে ব্যাংক অব কানাডাকে। এর একটি হলো ভুয়া তথ্য।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অর্থনৈতিক বিষয়ে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করছে। কীভাবে মূল্যস্ফীতি কাজ করে এবং তা ২ শতাংশের লক্ষ্যে নামিয়ে আনতে তারা কী করছে সে সবই ব্যাখ্যা করছে ব্যাংক অব কানাডা। যদিও অতি সম্প্রতি তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে অর্থনীতিকে ব্যাখ্যা করার বাইরেও মহামারির সময় গৃহীত নীতি সিদ্ধান্তের প্রতি যে আক্রমণ, তার বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলেছে। ২৫ আগস্ট এক টুইটে ব্যাংক অব কানাডা লিখেছে, ফেডারেল সরকারকে অর্থ সরবরাহে আমরা নোট ছেপেছি কিনা আপনার তা জানতে চেয়েছেন। উত্তর হচ্ছে, ‘না’। নোট ছাপানোর দাবি অস্বীকার করে এরপর আরও একাধিক টুইট করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চিন্তা ছড়িয়ে দিতে ও লক্ষ্য নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা সাধারণত কথা বললেও এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজন করলেও তার শ্রোতা এখনকার চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই কম বলে জানান লাভাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক স্টিফেন গর্ডন। তিনি বলেন, যারা তাদের কথা মন দিয়ে শুনছেন তারা বাজার বিশেষজ্ঞ। এবং তাঁরাই সম্ভবত একমাত্র লোক, যাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে পারেন।
বর্তমানের উচ্চ মূল্যস্ফীতি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রাজনীতিকরণের ফলে শ্রোতার সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে যেসব কানাডিয়ান সুদের হার বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের সংখ্যা। উচ্চ সুদের হার ব্যাংক অব কানাডার প্রতি এক ধরনের অনাস্থাও তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে একটা ভুল ধারণাও এবং তা হলো মহামারির সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ছেপেছে।
কনজার্ভেটিভ পার্টিও নতুন নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবচেয়ে জোরালো সমালোচক এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে গভর্নর টিফ ম্যাকক্লেমকে বরখাস্তের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন। তবে ম্যাকক্লেমকে বরখাস্তের পরিকল্পনা তিনি কীভাবে করেছেন সে ব্যাখ্যা দেননি পয়লিয়েভর। কারণ, ব্যাংক অব কানাডা অ্যাক্টে গভর্নরকে বরখাস্তের ক্ষমতা ফেডারেল সরকারকে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলে আসছেন, ফেডারেল সরকারের ব্যয় নির্বাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ছেপেছে এবং মূল্যস্ফীতি ডেকে এনেছে।
যদিও সেটা হয়নি বলে ব্যাংক অব কানাডার কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবদরা বলছেন। সি.ডি হাউয়ে ইনস্টিটিউটের মুদ্রা ও আর্থিক সেবা গবেষণার পরিচালক জেরেমি ক্রনিক বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখনই এ ধরনের নীতি তৈরিতে নামে তখনই এ ধারণা তৈরি হয় যে, ব্যাংক অব কানাডা নোট ছাপছে। কিন্তু আদতে সেটা ঘটেনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক টুইটে লিখেছে, আমরা বর্তমান সরকারের বন্ড খোলা বাজার থেকে কিনেছি। কিন্তু কেন? মহামারির শুরুতে এটা বদ্ধ বাজার উন্মুক্ত করতে সাহায্য করেছিল। এটা পরিবারগুলো, কোম্পানিগুলো ও সরকরাগুলোকে প্রয়োজনের সময় তহবিল প্রাপ্তিতে সহায়তা করেছে। বন্ডের অর্থ পরিশোধে আমরা নোট ছাপাই নি।