
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে কানাডার জাতীয় গড় আয়ু সাত মাস হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা। ১৯২১ সালে ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস রেজিস্ট্রেশন শুরু হওয়ার পর আয়ুস্কালে এতো বড় পতন আর হয়নি।
এ সংক্রান্ত প্রাথমিক উপাত্ত সোমবার প্রকাশ করেছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা। তাতে দেখা গেছে, ২০২০ সালে জাতীয় গড় আয়ু ছিল ৮১ দশমিক ৭ বছর। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে যা ছিল ৮২ দশমিক ৩ বছর। গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমেছে পুরুষের আট মাসেরও বেশি। পক্ষান্তরে কানাডায় নারীদের গড় আয়ু কমেছে পাঁচ মাসের মতো। প্রদেশভিত্তিক হিসাবে গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমেছে কুইবেক, অন্টারিও, ম্যানিটোবা, সাস্কেচুয়ান, আলবার্টা ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে কানাডায় মৃত্যু হয়েছে মোট ৩ লাখ ৭ হাজার ২০৫ জনের, ২০১৯ সালের তুলনায় যা ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ হাজার ১৫১ জন মারা গেছেন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে, যা ২০১০ সালে মোট মৃত্যুর ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ ছিল মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ। তবে মহামারির কারণে পরোক্ষাভাবেও সারা দেশজুড়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করে সংস্থাটি।
২০২০ সালে কানাডায় মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল ক্যান্সার। বছরটিতে মোট মৃত্যুর ২৬ দশমিক ৪ শতাংশই হয়েছে ক্যান্সারের কারণে। দ্বিতীয় প্রধান কারণ হৃদরোগে ২০২০ সালে মৃত্যু হয়েছে হয়েছে মোট মৃত্যুর ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা দেখিয়েছে, ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কোভিড-১৯ এ মৃত্যু হার সবচেয়ে বেশি নি¤œ আয়ের নেবারহুডগুলোতে।
অনাকক্সিক্ষত আঘাত ছিল ২০২০ সালে মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ এবং মোট মৃত্যুর ৫ শতাংশ হয়েছে অনাকাক্সিক্ষতভাবে আহত হওয়ার ফলে। মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের মধ্যে আরও আছে স্ট্রোক, শ^াসকষ্ট, ডায়াবেটিস, ইন্ফুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, আলঝেইমার এবং লিভার ডিজিজ ও সিরোসিস।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা বলছে, ২০২০ সালে কানাডায় প্রত্যাশিত গড় আয়ু যে পরিমাণে কমেছে তা বিশে^র অন্যতম সর্বোচ্চ। স্পেন, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু দেশের প্রত্যাশিত গড় আয়ুতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে কোভিড-১৯ মহামারি এবং এসব দেশে সর্বোচ্চ দেড় পর্যন্ত পর্যন্ত কমেছে গড় আয়ু। তবে নরওয়ে, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডে প্রত্যাশিত গড় আয়ুতে মহামারি কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। এসব দেশের প্রত্যাশিত গড় আয়ু একরইকম রয়েছে। কোনো কোনো দেশে উল্টো বেড়েছে।
২০২০ সালে যারা জন্মগ্রহণ করেছে তাদের প্রত্যাশিত আয়ু মহামারি-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরেছে বলে মনে করছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা। কারণ, স্বাস্থ্য সংকট অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে।