
বিদ্যমান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ফলে যে ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে তার জন্য ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট হুমকি কিনা তা বলার সময় এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও বৈশি^ক স্বাস্থ্য নেতারা। যদিও এর মধ্যেই সবখানেই বুস্টার ডোজ প্রদানের দাবি উঠছে।
ফাইজারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে তাদের ভ্যাকসিনের দুই ডোজ কম কার্যকর হলেও বুস্টার ডোজ অ্যান্টিবডি বাড়ানোর মাধ্যমে অধিক সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
ফাইজারের উপাত্তটি এখন বিজ্ঞানী মহল পর্যালোচনা করে দেখেননি। এতে বলা হয়েছে, দুই ডোজ ভ্যাকসিন এখনও ওমিক্রনের ফলে গুরুতর অসুস্থতা থেকে ব্যক্তিকে সুরক্ষা দিতে পারে। কারণ, ভ্যারিয়েন্টটির মিউটেশন দ্বারা টি-সেলের প্রতিরক্ষা বিঘিœত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত হওয়ার পর এই টি-সেলই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
উইনিপেগের এপিডিমিওলজিস্্ট সিন্থিয়া কার বলেন, কতটা পরিবর্তন হয়েছে তা এখনও অজানা। তবে লক্ষ্যণীয় মিউটেশন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পুরোপুরি নস্যাত করতে পারবে না।
কার অ্যান্টিবডিকে গ্লাভস পরিহিত একজন বেজবল ফিল্ডারের সঙ্গে তুলনা করেন। আর বলটি তুলনা করেন কোভিড-১৯ ভাইরাসের সঙ্গে। আঘাত করার আগেই ফিল্ডার বলটি ধরে ফেলতে পারেন। কিন্তু বলটি আকৃতি পরিবর্তন করে যদি ফুটবলের আকার ধারণ করে তাহলে গ্লাভস দিয়ে তা ধরা কষ্ট। তবে আপনি সেটা দেখতে পাচ্ছেন এবং ধরার সম্ভাবনাও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। এটি পুরোপুরি ফাঁকি দেয় না। কিন্তু ধরাটা চ্যালেঞ্জিং। এ কারণেই আমাদের টি-সেলটি এতো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা অ্যান্টিজেনকে তাড়া করে অ্যান্টিবডিকে সহায়তার জন্য তাদের মেরে ফেলে।
ফাইজার বলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুরক্ষার একটা উপায় হতে পারে বিদ্যমান ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করা। ফাইজারসহ অন্যান্য কোম্পানিও ওমিক্রনের জন্য বিশেষ ডোজ তৈরির চেষ্টা করছে। তবে বাজারে আনার আগে সেজন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রয়োজন রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞ ওমর খান বলেন, এরই মধ্যে অনুমোদিত ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজের মাধ্যমে অ্যান্টিবডির মাত্রা বাড়িয়ে কাজে আসতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক জনগণ ও যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল তাদের জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডির মাত্রা এমনিতেই কমে যায় এবং প্যাথোজেনের সংস্পর্শে আবার বেড়ে যায়। কিন্তু আসন্ন বিপদের কথা মাথায় রেখে জনগণকে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষায় তৃতীয় ডোজের মাধ্যমে অ্যান্টিবডির মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে। এরপর তারা সংক্রমিত হলেও লড়াই করতে প্রস্তুত থাকবে। কারণ তাদের অ্যান্টিবডির মাত্রাটা বেড়ে গেছে।