অন্টারিওর সব পাবলিক স্থানে মাস্ক পরিধানের জোরালো সুপারিশ করছেন চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. কিয়েরান মুর। রেসপিরেটরি ভাইরাসের ত্রিমাত্রিকÑআরএসভি, প্লু ও কোভিড-১৯ এর হুমকির কারণে এ সুপারিশ করছেন তিনি।
তবে এই মুুহূর্তে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান ফিরিয়ে আনার পক্ষে নন তিনি। এর পরিবর্তে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে ব্যক্তিদের সুরক্ষায় ব্যক্তির তার নিজের সর্বোচ্চটুকু করার ওপরই জোর দেন তিনি।
একইসঙ্গে অন্টারিওবাসীকে ফ্লু ভ্যাকসিন গ্রহণের পাশাপাশি অন্যান্য সাবধানতা অবলম্বনেরও আহ্বান জানান ডা. মুর। এর মধ্যে আছে কর্মক্ষেত্রে বা স্কুল শুরুর আগে রেসপিরেটরি উপসর্গগুলো দেখে নেওয়া এবং হাতের পরিচ্ছনতার চর্চা করা।
ডা. মুর বলেছেন, অন্টারিওবাসীকের এটা বুঝতে হবে যে, আপনার কাছে যেটা ঠান্ডা লাগা, চার বছর ও তার কমবয়ী শিশুর জন্য তা ভয়াবহ শ^াসতন্ত্রের সংক্রমণ ডেকে আনতে পারে। এই মৌসুমে শিশুদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার কোনো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে বাবা-মায়েদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
তাহলে কি বাড়িতে মাস্ক পরিধান করতে হবে? ডা. মুর বলেন, আমি দুঃখিত। কিন্তু তা-ও বলতে হচ্ছে, পরিধান করা উচিত। শিশুদের অসুস্থতার ঝুঁকি কমিয়ে রাখতে হাতের পরিচ্ছন্নতা এবং যতটা সম্ভব মাস্ক পরিধান করা উচিত। শ^াসতন্ত্রের উপসর্গের ব্যাপারে আপনাদের মনে রাখতে হবে যে, বড়দের জন্য এটা সামান্য হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য তা বড় সমস্যা।
ডা. মুর বলেন, দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ইনডোরে মাস্ক পরিধান করা উচিত। তবে তখনই তারা মাস্ক পরিধান করবে যখন তারা এটা সহ্য করতে পারবে এবং পরতে ও খুলতে পারবে। স্বাস্থ্যসেবা খাতকে রক্ষার প্রয়োজনেই অন্টারিওবাসীর ইনডোরে মাস্ক পরিধান করা উচিত। কিন্তু আবহাওয়া ক্রমেই ঠান্ডা হয়ে আসায় সামাজিক স্থানগুলোতে শিশুরা থাকলে সেখানে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার উদ্বেগ রয়েছে। হসপিটাল ফর সিক চিলড্রেনের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভেন্টিলেটরে থাকা শিশুদের অর্ধেক আরএসভিতে আক্রান্ত। বাকি অর্ধেক ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত।
তিনি বলেন, কোভিড আমাদের শিশুদের ক্ষতি করছে না। যদিও এটা অবশ্যই ক্ষতি করতে পারে। আরএসভি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা মিলে আমাদের শিশুদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের হাতে অবশ্যই হাতিয়ার থাকা দরকার, যা আমাদের শিশুদের ও আমাদের পরিবারকে সুরক্ষা দেবে। আমার উদ্বেগের জায়গাটা হলো এটা পরিবার ও বড় পাবলিক ভেন্যুর বাইরে সামাজিক অবস্থানগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।
শিশুদের দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা ডেকেয়ার কর্মীদের মাস্ক পরিধানের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. কিয়েরান মুর বলেন, প্রয়োজন হলে আমি অবশ্যই এ সংক্রান্ত আদেশ জারির বিষয়টি বিবেচনা করবো। তবে সামাজিক স্থানগুলোতে এটি বাধ্যতামূলক করেও যে খুব একটা ফল আসেনি সেটিও স্বীকার করেন তিনি। ডা. কিয়েরান মুর বলেন, আমি মনে করি, আমাদের লোকজনকে এ ব্যাপারে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের জনস্বাস্থ্য যোগাযোগের এটাই মৌলিক বিষয়।
নবজাতকদের বিষয়ে ডা. মুর বলেন, আর্েসভির ঝুঁকির কথা ভেবে সর্দির উপসর্গ রয়েছে এমন কারো কাছ থেকে সম্ভব হলে নবজাতকদের দূরে রাখা দরকার। সেটা সম্ভব না হলে নবজাতকের চারপাশের যে কারো সর্দির উপসর্গ দেখা দিলেই তার মাস্ক পরিধান করা উচিত। বয়স্ক শিশু, ভাই-বোন, বাবা-মা ও প্রাপ্ত বয়স্করা ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যের মাধ্যমে সহজেই নবজাতকদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে। এ কারণেই সর্দির উপসর্গ রয়েছে এমন কারো কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। লোকসমাগম থেকে শিশুদের বিশেষ করে নবজাতকদের দূরে রাখার মাধ্যমেও সংক্রমণ কমিয়ে রাখা সম্ভব।