ইউক্রেনকে কানাডার অস্ত্র সহায়তা নিয়ে বিতর্কের সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর যে অচলাবস্থা তাতে অন্যভাবে আরও ভালো সহায়তা দিতে পারে কানাডা।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইউক্রেনের জন্য একাধিক সহায়তা ঘোষণা করার পরদিন এ মন্তব্য এলো। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সহায়তার মধ্যে আছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণের আওতা সম্প্রসারণ, সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা ও আর্থিক সহায়তা। সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে মেটাল ডিটেক্টর, থার্মাল বাইনোকুলার, রেঞ্জফাইন্ডার, আর্মার প্লেট ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এ তালিকায় অস্ত্রের বিষয়টি নেই।
এ সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা প্রদানে বুধবার বারবার অস্বীকৃতি জানান জাস্টিন ট্রুডো। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রভাবশালী ইউক্রেনিয়ান কমিউনিটি।
ইউক্রেনিয়ান কানাডিয়ান কংগ্রেসের নির্বাহী পরিচালক ইহর মিশালশিশিন বলেন, এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাইনি আমরা। আমাদের সব ন্যাটো মিত্রই এটা করছে। গত সপ্তাহে প্রতি ঘণ্টায় পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। এ অবস্থাতেও কানাডা কেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে না সেটা বোঝা বেশ কঠিন।
লিবারেল সরকার কেন কিয়েভে সৈন্য পাঠাচ্ছে না তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ কেউ বলছেন, কানাডা যদি প্লেনভর্তি অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠায় তাহলে রাশিয়ার আক্রমণের সিদ্ধান্তে তেমন কোনো পরিবর্তন আনবে না।
ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার অধ্যাপক রোলান্ড প্যারিস বলেন, কানাডা অস্ত্র সরবরাহ করলে কী অর্জিত হবে তার চেয়েও বড় হয়ে দেখা দিয়েছে কানাডা অস্ত্র পাঠাবে কিনা সেই বিতর্ক। মারণাস্ত্র সরবরাহ সত্ত্বেও ওই অঞ্চলে রুশ সৈন্য সংখ্যা অথবা তারা চাইলে ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
এর চাইতে রাশিয়াকে নিবৃত্ত করতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে বেশি কার্যকর মনে করছেন প্যারিস। তিনি বলেন, কানাডাসহ ন্যাটো অংশীদাররা সত্যি সত্যিই পূর্ব ইউরোপে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করবে কিনা সে বার্তা দেওয়া উচিত।
লাটভিয়াতে বর্তমানে ৫৪০ জন কানাডিয়ান সৈন্য রয়েছে। ইউক্রেনেও ২০০ কানাডিয়ান সৈন্য রয়েছে, যারা সেখানকার সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সেখানে আরও ৬০ জন সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো।
ইউক্রেনে কানাডার অস্ত্র পাঠানোর ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শার্লটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফেন হ্যাম্পসনও। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তায় ইউক্রেনকে কানাডার সহায়তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাইবার যুদ্ধ সত্যি সত্যিই প্রথম সারির আক্রমণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং কানাডা এক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে পারে।
ইউক্রেনে অস্ত্র না পাঠানো কানাডাই একমাত্র ন্যাটো সদস্য নয়। জার্মানিও ইউক্রেনে অস্ত্র না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।