ইন্টারনেট নিয়ে বিড়ম্বনা নুনাভাটে অস্বাভাবিক কিছু নয়। কানাডার অন্যান্য অঞ্চলের মতো আনলিমিটেড ইন্টারনেটের সুযোগ এখানে অচিন্তনীয়। ডাটার মাসিক সর্বোচ্চ যে সীমা তা ব্যবহারের জন্য নাগরিকদের পরিশোধ করতে হয় অস্বাভাবিক মূল্য।
নুনাভাটের ইকালুইতে বসবাস করেন অ্যামি ম্যাটিবুক। তিনি বলছিলেন, প্রতি মাসেই আমি ও আমার বন্ধুকে এই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় যে, ইন্টারনেট সেবাদাত প্রতিষ্ঠান থেকে ফোন করে বলবেÑআপনার ডাটা সীমা অতিক্রম করে গেছে। ইন্টারনেট বাবদ প্রতি মাসে আমাদের ২৫০ ডলার খরচ হয়ে যায়। আমার বন্ধু ¯œাতোক্তর শেষ করছে এবং প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা জুমে থাকতে হয়। সেলফোনে সব সময়ই তাকে পর্যাপ্ত ডাটা রাখতে হয়। কারণ, ইন্টারনেটের সীমা শেষ হয়ে গেলেই যাতে সেটি চালু করা যায়।
নুনাভাটের ইন্টারনেট সমস্যা নতুন নয়। তবে মহামারি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে বলে জানান অঞ্চলটির সিনেটর ডেনিস প্যাটারসন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নুনাভাটের প্রান্তিক কমিউনিটিগুলোর জন্য ইন্টারনেটের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে হতাশার কথা হলোÑপরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।
নুনাভাট টাঙ্গাভিক ইনকরপোরেশনের এক প্রতিবেদন বলছে, কানাডায় ইন্টারনেটের যে গড় গতি, নুনাভাটে গতি তার চেয়ে আটগুণ কম। নুনাভাটই কানাডার একমাত্র অঞ্চল যেখানে সেকেন্ডে ২৫ মেগাবাইটসেরও কম গতির ইন্টারনেট পাওয়া যায়। এখানে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১৫ মেগাবাইটস গতির ইন্টারনেট সুবিধা মেলে।
যদিও কানাডার ৮৬ শতাংশ বাড়িতে আনলিমিটেড ডাটা প্যাকেজের সুবিধা রয়েছে এবং ৯৪ শতাংশ ন্যুনতম ২৫ মেগাবাইট গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে। কানাডার পরিবারগুলো যে পরিমাণ ডাটা ব্যবহার করছে, নুনাভাটে সেটি পেতে গেলে পরিবারপ্রতি খরচ করতে হবে বছরে কমপক্ষে ৭ হাজার ডলার।
এছাড়া নুনাভাটই কানাডার একমাত্র প্রদেশ বা অঞ্চল যেখানে ফাইবার ইন্টারেনট নেই। অন্য প্রদেশ থেকে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে নুনাভাটকে সংযুক্ত করার তিনটি প্রস্তাব আছে। তবে তা বাস্তবায়নে আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে।
প্যাটারসন বলেন, নুনাভাটে ইন্টারনেট সেবা উন্নত না হওয়ার অন্যতম কারণ সেবাদাতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার অনুপস্থিতি। বেলের মালিকানাধীন নর্থওয়েস্টেল একাই নুনাভাটের ২৫টি কমিউনিটির মধ্যে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করছে। এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কিনিকও ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন সেবা দিচ্ছে, তবে অন্য নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। কারণ নর্থওয়েস্টেলের প্রবেশাধিকার কিনিকের নেই। আরেকটি কারণ হলো ইন্টারন্টে ব্যবস্থা উন্নয়নে এর আগে ঘোষিত ফেডারেল তহবিল অঞ্চলটিতে না পৌঁছানো।
তবে সাশ্রয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা যাতে নুনাভাটের বাসিন্দারা পান সেজন্য ফেডারেল সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবেন বলে জানান প্যাটারসন।