আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক কানাডিয়ান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। একই সঙ্গে নিরাপদ কিনা সেই শঙ্কা, ভ্যাকসিন গ্রহণে তাদেরকে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্তও করে তুলছে বলে নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
লেজার অ্যান্ড দ্য অ্যাসোসিয়েশন ফর কানাডিয়ান স্টাডিজ গত সপ্তাহে সমীক্ষাটি পরিচালনা করে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রতি ১০ জনের মধ্যে আটজনই ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কানাডা ও বিশে^র বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিনেশন শুরু হওয়ার পর থেকে সময়ের সময়ের সঙ্গে আগ্রহীর সংখ্যাও বাড়ছে। গত বছরের মধ্য অক্টোবরে ভ্যাকসিনের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন ৬৩ শতাংশ কানাডিয়ান। চলতি বছর ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ এবং মার্চের শুরুর দিকে তা আরও বেড়ে হয় ৭৩ শতাংশ। ৯ থেকে ১১ এপ্রিল ১ হাজার ৫০৪ জন কানাডিয়ানের ওপর অনলাইনে সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হয়।
লেজারের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান বোর্ক বলেন, অধিক সংখ্যক কানাডিয়ান নিরাপদে ভ্যাকসিন গ্রহণ অব্যাহত রাখায় দেশটির মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিনের প্রতি আস্থাও ক্রমেই বাড়ছে।
ভ্যাকসিনের প্রতি আগ্রহ বাড়লেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনে রক্ত জমাট বাধার ঘটনার পর এর প্রতি দ্বিধাও তৈরি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কানাডায় ৭৩ লাখ বা মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ড ইমিউনিটির জন্য ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ কানাডিয়ানের বাহুতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১২ শতাংশ কানাডিয়ান ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নন। কী করবেন সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি ৯ শতাংশ কানাডিয়ান। বোর্কের মতে, ভ্যাকসিনের প্রতি এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মূল কারণ এটা কতটা নিরাপদ সেই ভয়। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এখানে অতোটা দায়ী নয়।
ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়ে যারা দ্বিধায় আছেন তাদের এক-চতুর্থাং ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। এর দীর্ঘমেয়াদী ফল সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে অবগত নন বলে জানিয়েছেন ৯৪ শতাংশ। পাশর্^প্রতিক্রিয়াকে বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন ৮৬ শতাংশ কানাডিয়ান। অন্যদিকে ৮৫ শতাংশের মত হলো ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ সে ব্যাপারে যথেষ্ট পরীক্ষা করা হয়নি।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৫ শতাংশ কানাডিয়ানের ধারণা, মহামারির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তারা পেরিয়ে এসেছেন। দুই সপ্তাহ আগে যেখানে এক-তৃতীয়াংশ কানাডিয়ান এমন ধারণা ব্যক্ত করেছিলেন। তবে অর্ধেক কানাডিয়ান মনে করেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছেন তারা। আর ২৮ শতাংশের ধারণা, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এখনও আসেনি।