গত বছর যখন মহামারি শুরু হয় তখনও তিন সন্তানের মা ক্যাসি ফানের রিয়েলটরের একটি পূর্ণকালীন চাকরি ছিল। এরপর বাকি আর সবার মতো তার জীবনও ওলটপালট হয়ে যায় এবং পরিস্থিতির সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেবেন তা নিয়ে অকুলপাথারে পড়ে যান।
ফানের ভাষায়, আমার কী করা উচিত তা জানা ছিল না। চারদিকে মহামারির খবর ও অন্যান্য সবকিছু আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে এবং আমি উদ্বিগ্নতা ডুবে যেতে থাকি।
রিয়েলটরের চাকরি থেকে বেরিয়ে আসার পর শেয়ার কেনাবেচার বিষয়টি রপ্ত করতে থাকেন ফান, যাতে করে কিছু রোজগার করা যায়। পাশাপাশি সন্তানদের বিশেষ করে দুই বছর বয়সী সন্তানের অনলাইন শিক্ষায় সহায়তায় মন দেন। জীবনযাপনের এই আমুল পরিবর্তনও তার ওপর থেকে প্রাত্যহিক চাপ কমাতে পারেনি। ফলত তার উদ্বেগও কমেনি এবং এ থেকে মুক্তি পেতে একেবারে নতুন কিছুর সন্ধান করতে থাকেন ফান।
সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে ফান বলছিলেন, আমার এক বন্ধু আমাকে সিবিডির কথা বলেন। এটা ক্যানাবিস বা গাঁজা গাছ থেকে ক্যানাবিডিয়ল। এটা নেওয়া শুরু করার এক সপ্তাহের মধ্যে আমি ¯œায়বিকভাবে শান্ত হয়ে যায়। এখন কী করতে হবে ও পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেব সে চিন্তাও করতে পারি।
ক্যানাবিস নিয়ে অপপ্রচার আছে সেটা নিয়ে প্রথম দিকে কিছুটা চিন্তায় ছিলেন ফান। বিশেষ করে তিনি যখন তিন সন্তানের মা। তবে এটা গ্রহণ করার পর বেশ স্বস্তি পেয়েছেন। তার চাপ কমাতে মেজাজ ঠিক অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে ক্যানাবিস বেশি সহায়তা করেছে তাকে। এমনকি শরীরচর্চা ও মেডিটেশনেও এমন ফল পাননি তিনি।
ফান বলছিলেন, উদ্বিগ্নতা দূর করতে এটা আমাকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে।
ফানের মতো আরও অনেক কানাডিয়ানই মহামারির মধ্যে কোনো না কোনোভাবে ক্যানাবিসের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। মহামারিতে অ্যালকোহল, মাদক ও ওষুধ সেবনে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা নিয়ে সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারির আগে ক্যানাবিস সেবন করতেন ১৪ শতাংশ কানাডিয়ান। এখন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশে।
ক্যানাবিসের প্রতি এই আগ্রহের কারণ হিসেবে কানাডিয়ানরা বর্ধিত চাপ, একঘেয়েমি ও একাকিত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। এর ফলে কানাডায় ক্যানাবিসের বিক্রিও বেড়ে গেছে।
টরন্টোর অ্যানেক্স নেবারহুডের ডলি’স ক্যানাবিসের কর্ণধার ইয়াদ সিং। নিউক্লিয়ার মেডিসিনে ডিগ্রিধারী ইয়াদ চিকিৎসায় ক্যানাবিসের ব্যবহার নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, তার ডিসপেনসারি চেষ্টা করছে মহামারির কারণে একাধিকবার লকডাউনের খাড়ায় পড়া কানাডিয়ানদের চাপ কিছুটা হলেও কমাতে।