কানাডার অন্তত দুই ডজন স্থানে ২ নভেম্বর গাজার সমর্থনে সমাবেশ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশে তারা ইসরায়েল-হামাস সংঘাত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব অংশীদারদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেওয়ার পর সমাবেশগুলো অনুষ্ঠিত হলো। একই সঙ্গে গাজা ভূখ-ের হামাস শাসকদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
প্যালেস্টিনিয়ান ইয়ুথ মুভমেন্ট জাতীয় বিক্ষোভ দিবসের ডাক দেওয়ার পর কানাডার টরন্টো, মন্ট্রিয়ল, অটোয়া ও ফেডিরিক্টনের মতো স্থানগুলোতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। গ্রুপটি ওই অঞ্চলে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি সেখানে মানবিক সহায়তায় প্রবেশে বাধা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপে কানাডা যাতে সমর্থন না দেয় সেই দাবিও জানিয়েছে তারা। ২০০২ সাল থেকে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রেখেছে কানাডা সরকার।
মন্ট্রিয়লে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কুয়ার্টিয়ের ডেস স্পেক্টাকলস নেবারহুড ডাউনটাউনের মধ্য দিয়ে পদযাত্রা করে। অনেকেই এ সময় ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করেন। ‘মুক্ত ফিলিস্তিন’ ও ‘এখনই যুদ্ধ বন্ধ করো’ শ্লোগানেও কণ্ঠ মেলান তারা।
মন্ট্রিয়লের একজন বিক্ষোভকারী সায়মা নাখলি বলেন, কানাডিয়ান কর্মকর্তাদের ফিলিস্তিনের ওপর হত্যাকা-ের নিন্দা জানাতে অনীহা মানবাধিকারের ব্যাপারে সরকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে তার মধ্যে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। কানাডা সব সময়ই মানবাধিকার ও মানবিকতার পাশে রয়েছে। সেই মূল্যবোধ কোথায় গেলো?
প্যালেস্টিনিয়ান ইয়ুথ মুভমেন্টের সংগঠক সারাহ শামি মন্ট্রিয়লের সমাবেশে বলেন, উত্তর আমেরিকাজুড়ে আয়োজিত বিক্ষোভগুলোতে ঐতিহাসিক জমায়েতের প্রত্যাশা করছেন তিনি।
গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে ৯ হাজার ৪৪০ জনের মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর গ্রুপটির ইসরায়েলে হামলার ফলশ্রুতিতে শুরু হয়। ওই হামলায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নাগরিককে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর পরপরই ইসরায়েল যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং তার পর থেকে প্রতিদিনই হামলা চালিয়ে আসছে। গত সপ্তাহে বোমা হামলা বাড়িয়ে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গাজার ২৩ লাখ মানুষের খাবার, জ¦ালানি ও মৌলিক সামগ্রী নিয়ে সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়্হাুর সঙ্গে বৈঠকের পরদিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ২ নভেম্বর জর্ডানে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ব্লিঙ্কেন বলেন, যুদ্ধবিরতি হামাসকে বহাল তবিয়তে থাকতে সহায়তা করবে বলে আমার বিশ^াস। এর মধ্য দিয়ে তারা পুনর্গঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে এবং ৭ অক্টোবরের মতো একই হামলা আবারও চালাবে।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, যুদ্ধবিরতি ছাড়া এই অঞ্চলের উদ্বেগ ঘৃণার সাগরে রূপ নেবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কর্মকা- কী হবে তা নির্ধারণ করে দেবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হামাসের হাতে বন্দি সবাইকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির সুযোগ নেই।