ডেভেলপারদের জন্য গ্রিনবেল্ট উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড। গ্রিনবেল্ট থেকে বিতর্কিত জমি অবমুক্তকরণের সিদ্ধান্তকে ভুল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
নায়াগ্রা ফলসে এক রিট্রিটে ককাসের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেন ফোর্ড। তিনি বলেন, কমিউনিটির কাছ থেকে যা শুনেছেন আমাদের ককাস আমার সঙ্গে তা ভাগাভাগি করেছেন। অন্টারিওর বাসিন্দাদের বলতে চাই, আমি আপনাদের কথা শুনছি। আপনাদেরকে আমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, গ্রিনবেল্ট আমি স্পর্শ করব না। সেই প্রতিশ্রুতি আমি রাখিনি। সে কারণে আমি সত্যি সত্যিই দুঃখিত।
এক সংবাদ সম্মেলনে ফোর্ড বলেন, প্রতিশ্রুতি রক্ষা নিয়ে আমি গর্ব করে থাকি। গ্রিনবেল্ট উন্মুক্ত করে দেওয়াটা ছিল ভুল। বিষয়টি দ্রুত করতে যে ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল সেটাও ছিল ভুল।
গ্রিনবেল্ট থেকে সরকারের জমি অবমুক্তকরণ নিয়ে অন্টারিওর অডিটর জেনারেল বনি লিসিক কড়া প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে কিছু ডেভেলপারকে বাড়িত সুবিধা দেওয়া হয়েছে এবং গ্রিনবেল্ট থেকে জমি অবমুক্তকরণের সিদ্ধান্তে তাদের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল।
ফোর্ড বলেন, গ্রিনবেল্ট থেকে কোন জমি অবমুক্ত করা হবে সেজন্য যে প্রক্রিয়া তাতে এমন কিছু বিষয় আছে যার ফলে কিছু ডেভেলপারের অন্যদের চেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটা আমাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনগণের মনে প্রশ্ন উত্থাপনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমরা যে পরিবর্তনগুলো এনেছিলাম তা পরিবর্তন করতে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতেও গ্রিনবেল্টে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না। কারণ, আপনি যদি সঠিক কারণে ভালো উদ্দেশেও কিছু করেন সেক্ষেত্রেও কিছু ভুল থাকবে।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের পরও ফোর্ড বলছেন, আবাসন সংকট সমাধানে গ্রিনবেল্টের উন্নয়ন বড় ভূমিকা রাখতে পারত। এর ফলে প্রদেশে হাজার হাজার বাড়ির মজুদ গড়ে উঠত। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমরা বড্ড তাড়াহুড়া করেছি এবং ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অডিটর জেনারেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রদেশ গ্রিনবেল্ট থেকে যে ৭ হাজার ৪০০ একর জমি অবমুক্ত করেছে তার ৯২ শতাংশই পেয়েছে তিন েেডভেলপার, যাদের আবাসন মন্ত্রণালয়ে সরাসরি প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। এর ফলে ১৫টি জমির মালিকরা তাদের সম্পত্তির মূল্য ৮৩০ কোটি ডলার বাড়াতে পারতেন।
প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে যে, অতি প্রয়োজনীয় আবাসন গড়ে তুলতে অন্টারিওতে এখনই পর্যাপ্ত জমি রয়েছে। তাই আবাসনের লক্ষ্য অর্জনে গ্রিনবেল্ট থেকে জমি অবমুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই।
গ্রিনবেল্ট কেলেঙ্কারির ঘটনায় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় সদস্যের পদত্যাগের একদিন পরই ফোর্ড সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের এই ঘোষণা দিলেন। অন্টারিওর পাবলিক অ্যান্ড বিজেনেস ডেলিভারি মন্ত্রী এমপিপি খালিদ রশিদ ১৯ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভা ও ককাস থেকে পদত্যাগ করেন।
এদিকে গ্রিনবেল্ট ইস্যুতে ডগ ফোর্ডের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকে অন্টারিওবাসীর জন্য বিজয় হিসেবে দেখছেন অন্টারিও এনডিপির অন্তবর্তী নেতা মারিট স্টাইলিস। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এটা যে ভুল সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ ছিল না। তারপরও ফোর্ডের কনজার্ভেটিভরা এ নিয়ে জোরাজুরি করছিলেন। তাদের ঘনিষ্ঠ কাউকে কাউকে সুবিধা দিতে এটা ছিল সরকারের হিসাবি চেষ্টা।