মানবদেহে ক্যান্সারের জন্য দায়ী জিনের ওপর জ্ঞানার্জনের পর ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার একটি ল্যাবরেটরিতে রোগটি নিয়ে গবেষণা করতে চান সারাহ ল্যাফ্রাম্বোয়িস। তার গবেষণাটি হবে মডেল অর্গানিজমের মতো।
তিনি বলেন, ইস্ট ও মানবদেহে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ একই জিন। এ নিয়ে গবেষণার উদ্দেশ্য হলো রোগের বিভিন্ন পর্যায়ের কারণগুলো কীভাবে কাজ করে তা খুঁজে বের করা।
২৭ বছর বয়সী সারাহ সারাজীবন বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্নই দেখেছেন। এক দশক ধরে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন এবং তার পিএইচডি শেষের পথে। এই পড়াশোনার জন্য তাকে ১ লাখ ডলারের মতো শিক্ষা ঋণ নিতে হয়েছে। সারাহ বলেন, টিকে থাকার জন্য একসঙ্গে আমাকে অনেকগুলো চাকরি করতে হয়। আমি যখন মাস্টার্স শুরু করি তখন আমাকে অতিরিক্ত ঋণ নিতে হয়। কারণ, ওই সময় ল্যাবের বাইরে কাজ করার অনুমতি ছিল না।
কানাডায় গবেষণা শিক্ষার্থীদের অর্থায়ন করা হয় মূলত তিনটি ফেডারেল অনুদান এজেন্সির স্কলারশিপ ও ফেলোশিপের মাধ্যমে। এগুলো হলো সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ রিসার্চ কাউন্সিল, ন্যাচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ কাউন্সিল ও কানাডিয়ান ইনস্টিটিউটস অব হেলথ রিসার্চ।
কিন্তু বছরের পর বছর ধরে অনুদান বাড়ছে না। গত বছর পর্যন্তও সারাহ বছরে ২১ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করতে পেরেছেন। সে সময় তিনি ন্যাচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কাউন্সিল থেকে ৩৫ হাজার ডলারের বৃত্তি পান।
এই সংকট কেবল তার একার নয়, অর্থায়ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে অটোয়া সায়েন্স পলিসি নেটওয়ার্কের জন্যও। তারা বলছে, অনেক স্কলারশিপের পরিমাণ ন্যুনতম মজুরির চেয়েও কম। এছাড়া গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ ২০০৩ সালের পর আর বাড়েনি। পোস্ট-ডক্টরাল স্কলারদের বাড়লেও তা ১৯ বছরে মাত্র ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। এ কারণেই এক পিটিশনে অর্থের পরিমাণ বাড়াতে ফেডারেল সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে। এতে ১ হাজার স্বাক্ষর সংগৃহীত হয়েছে এবং ফলে সংসদ অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে।
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বোটানির সহযোগী অধ্যাপক ও কানাডিয়ান সোসাইটি অব ইকোলজি অ্যান্ড ইভলিউশনের প্রেসিডেন্ট জিনেট হুইটন বলেন, ক্যারিয়ার বিজ্ঞানী হিসেবে শুরুর দিকে আর্থিক সহায়তার ফলে তিনি উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে যে অর্থনেতিক বাস্তবতা তাতে আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব হতো না।
এদিকে হাউজ অব কমন্সের সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ কমিটি তাদের জুনের প্রতিবেদনে আরও স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ চালু সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে গবেষকদের তহবিল ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।