
নিজের পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দারিয়া ইভান্তসোভাকে। কানাডায় ইউক্রেনের এই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে অধিকাংশ সময়ই ব্যয় করতে হচ্ছে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং যুদ্ধের খবর পড়ে। যুদ্ধের কারণে বাবা-মায়ের আয় না থাকায় কীভাবে অর্থের সংস্থান করা যায় সেটাও ভাবতে হচ্ছে তাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে শ্রেণিকক্ষের কথা স্মরণ করে তিনি বলছিলেন, পুরো পরিস্থিতি ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে শিক্ষাকাজে মনোযোগ দেওয়াকে কঠিন করে তুলেছে। আমি স্ক্রিন ও অধ্যাপককে খুঁজছিলাম এবং আমি তাদেরকে শুনতে পাচ্ছিলাম না। পাঠদান শেষে অধ্যাপক আমার কাছে এসে গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলেন এবং আমি কেবল কাঁদলাম। কারণ, যা ঘটছে তা অনুধাবন করাটা সত্যিই কঠিন। আমরা পরিবার আছে ইউক্রেনে আর আমি কানাডায় এবং তাদের জন্য আমি কিছু করতে পারছি না।
যুদ্ধের কারণে পরিবারগুলো বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ায় ও আয়ের উৎস হারানোয় নিজেদের খরচ চালানোর ব্যাপারে উদ্বিগ হয়ে পড়েছেন কানাডায় অধ্যয়নরত ইউক্রেনের শিক্ষার্থীরা। এর সঙ্গে স্বজনদের নিয়ে সার্বক্ষণিক উদ্বেগ প্রাত্যহিক জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে বলে জানান তারা।
২১ বছর বয়সী ইভান্তসোভা বলেন, তার বাবা-মা ও ছোট বোন সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনে তাদের শহর খারকিভ ছেড়ে বুলগেরিয়ায় যেতে সক্ষম হয়েছেন। সেখানে তারা এক বন্ধুর বাড়িতে অবস্থান করছেন।
বাবা-মা তার শিক্ষার খরচ দিয়ে থাকেন। কিন্তু উদ্বাস্তু হয়ে পড়ায় ও আয়ের উৎস হারিয়ে ফেলায় ইভান্তসোভাকেই তার রোজগার থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ বাবা-মাকে পাঠাতে হচ্ছে তাকে। তিনি বলেন, নিজের জন্যই আমাকে কাজ করতে হচ্ছে। কারণ, আমার বাবা-মা ইউক্রেনে ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে চলে গেছেন। তাই তারা আমাকে অর্থ পাঠাতে পারছেন না। তাই এই মুহূর্তে নিজের খরচ নিজেই চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও ইউক্রেনিয়ান কানাডিয়ান স্টুডেন্ট’স ইউনিয়েনের ডাইভারসিটি অফিসার মাইকেলা ইয়ারমল-মাতুসিয়াক বলেন, ইউক্রেনের অধিকাংশ শিক্ষার্থীকেই এই সেমিস্টারের টিউশন ফি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এপ্রিল পর্যন্ত আবাসন খরচও দিতে হবে। কিন্তু এই টার্ম শেষে কী করবেন অনেকেই তা জানেন না। অর্থের সংস্থান নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। মুদি পণ্য ও যাতায়াত খরচের জন্য শিক্ষার্থীদের আমাদের কাছে আসতে হচ্ছে।
আাগামী কয়েক মাস কোথায় থাকবেন তা নিয়ে উদ্বেগে পড়তে হয়েছে ইউক্রেনের কিছু শিক্ষার্থীকে।