বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
1 C
Toronto

Latest Posts

প্রবাসীর প্লট মানেই ভোগান্তি

- Advertisement -
ফাইল ছবি

ভোগান্তি ছাড়া প্লটের কোনো কাজ হয় না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক)। প্লট বিক্রির অনুমতি, নামজারি, লিজ রেজিস্ট্রি বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি- যে কাজেই যান না কেন, হয়রানির শিকার হতে হয় গ্রাহককে। একটি প্লটের এ ধরনের কাজ করতে ১০-১৫ দিনই যথেষ্ট। অথচ কখনও কখনও গ্রাহককে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। দিতে হয় ঘুষ। বিশেষত প্রবাসীদের এসব ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি হয়।

প্রবাসীর প্লট হলেই রাজউকের নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জেঁকে ধরেন তাকে। শুরুতেই প্লট বিক্রি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কারণ তাতে প্লটটি অন্য কারও কাছে বিক্রির দালালি করে কিছু হাতিয়ে নেওয়া যায়। তাতে রাজি না হলে প্রবাসীদের কাছে এসব কাজের ‘অসুবিধা’র দিকগুলো তুলে ধরেন তারা। প্লট বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রবাসী তারপরও বিক্রি করতে না চাইলে তার কাছে কাজের জন্য ‘খরচা’ দাবি করা হয়। অনেকেই ঝামেলা এড়াতে ‘খরচা’ দিয়ে দেন। যদিও ভোগান্তি খুব একটা কমে না।

- Advertisement -

এ ক্ষেত্রে ‘খরচা’ না দিলে নানা ছুতায় নানা ভুল ধরে প্লট মালিকদের অবিরাম হয়রানি করা হয়। ছবি মিলছে না বা স্বাক্ষর মিলছে না, বিভিন্ন কাগজপত্রের ঘাটতি আছে- এ রকম নানান অজুহাতে ঘোরানো হয় গ্রাহককে। পূর্বাচল, ঝিলমিল বা উত্তরা- যে কোনো প্রকল্পের চিত্রই প্রায় অভিন্ন। পূর্বাচলে প্লটের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পূর্বাচল সেলে দালাল চক্রও অনেক বড়।

রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, রাজউকের কয়েকটি এলাকায় ইতোমধ্যে ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নকশা অনুমোদনের কার্যক্রম অনলাইনে চালু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকরা ঘরে বসেই কাজ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের সঙ্গে রাজউক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎকোচ লেনদেনের সুযোগও সংকুচিত। লিজ দলিলের ক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি। রাজউকের চক্রটি চায়ও না লিজ দলিলের কাজ অনলাইনে চালু হোক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্লট পরিবর্তন করে খারাপ স্থানে দেয় অসাধু ওই চক্র। সুন্দর লোকেশন বা কর্নার প্লটগুলোর ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তার এক নিকটাত্মীয় পূর্বাচলের ১৪ নম্বর সেক্টরের ৩০৫ নম্বর রোডের ১০ নম্বর প্লট বরাদ্দ পান প্রবাসী কোটায়। বছরখানেক আগে তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। তিনি চান সাড়ে সাত কাঠা আয়তনের প্লটটি রেজিস্ট্রি করে স্ত্রীকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়ার। কিন্তু রাজউকে রেজিস্ট্রি দলিলের জন্য গেলে পূর্বাচল সেলের দালাল চক্র শুরুতেই প্লট বিক্রি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তারা এমন ইঙ্গিতও দেয়, বিক্রি না করলে হয়তো প্লটই গায়েব হয়ে যেতে পারে। তবে দালাল চক্রের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে তিনি প্লট রেজিস্ট্রি করার জন্য অসুস্থ প্রবাসী আত্মীয়কে আমেরিকা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। রাজউকে গিয়ে দ্বিতীয় দিনে স্বাক্ষর দিতে সক্ষম হন তিনি এবং তার পর প্রায় দুই মাস ঘুরে দালাল চক্রকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে প্লট রেজিস্ট্রি করেন। পরে সেটির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়ার জন্য আবেদন করলে দালাল চক্র প্লট বেঁচে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। দালাল চক্র ওই প্লটের দাম নির্ধারণ করে তিন কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রবাসীর আরেক আত্মীয় সেটির দাম দিতে চান সাত কোটি টাকা। বিষয়টি দালাল চক্রকে জানালে তারা ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দেওয়ার অনুমোদন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করতে থাকে। পরে ওই ব্যক্তি পরিস্কার জানিয়ে দেন যে, প্লট বিক্রি করা হবে না। এখনও তিনি প্লটের পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি।

বরিশালের বানারীপাড়ার আরেক বাসিন্দা মো. রিপন পূর্বাচলে প্রবাসী কোটায় একটি প্লট পান। প্লটের সব কিস্তির টাকা পরিশোধ করে তিনি রেজিস্ট্রি করতে চান। রিপন জানান, চাকরিতে বেশি ছুটি মেলে না বলে এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে প্লটের সব কাজ এগিয়ে রাখার উদ্যোগ নেন তিনি। যাতে ঢাকায় এসে দুই-এক দিনের মধ্যে কাজ শেষ করে আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে পারেন। কিন্তু তার আত্মীয় দীপনের কাছে লিজ দলিল করার জন্য দালাল চক্র এক লাখ টাকা দাবি করে। এরপর তার কাজ আর এগোয়নি। এ অবস্থায় দীপন এক সাংবাদিকের কাছে যান। ওই সাংবাদিক পূর্বাচল প্রকল্পের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানান। প্রকল্পের পরিচালক সংশ্নিষ্ট কর্মচারীকে ডেকে পাঠালে তিনি তখন হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরিচালক কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাবও দেন। এ ছাড়া ইলিয়াস মোল্লা নামের এক কর্মকর্তাকে অসহযোগিতার জন্য ভর্ৎসনা করেন।

ফাইলটি একপর্যায়ে চেয়ারম্যানের দপ্তরে পৌঁছলে সংশ্নিষ্ট যাচাই-বাছাই সেল থেকে প্লট বরাদ্দের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত তালিকার ফটোকপি সংযুক্ত করার কথা বলে সেটিকে আবার নিচে ফেরত পাঠানো হয়। মো. রিপন বলেন, কখনোই পত্রিকার তালিকার কপির প্রয়োজন হয় না। তার পরও তাকে এই উসিলায় ঘোরানো হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি পত্রিকার কপি সংগ্রহের পর ফটোকপি করে ফাইলে যুক্ত করে সেটি আবারও চেয়ারম্যানের দপ্তরে পৌঁছান। এভাবে শেষ পর্যন্ত তার রেজিস্ট্রি দলিল হয়। যেখানে এক সপ্তাহের জন্য তিনি ঢাকায় এসেছিলেন, সেখানে তাকে এসব ঝামেলায় এক মাসেরও বেশি সময় কাটাতে হয়। আমেরিকায় ফিরে তিনি জানতে পারেন, দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তাকে সেখানকার প্রতিষ্ঠানের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

চাঁদপুরের মতলব থানার ইমামপুর গ্রামের ছমির উদ্দিন মোল্লার ছেলে ব্রিটেন প্রবাসী মো. আবুল বাশার ২০০৩ সালে প্রবাসী কোটায় রাজউকের পূর্বাচল উপশহর প্রকল্পে পাঁচ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ পান। ৩০ নম্বর সেক্টরের ৩০৩ নম্বর রোডের ২২ নম্বরের কর্নার প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয় তাকে। তিনি দ্রুতই পুরো অর্থ পরিশোধ করেন। দেশে ফিরে প্লটটি বুঝে নিতে চাইলে তাকে বলা হয়, প্লটটি তাকে দেওয়া যাবে না। পরে ২০০৫ সালের ৫ জুন রাজউক তাকে ওই সেক্টরেরই ৩০১ নম্বর রোডের ২২ নম্বর প্লট বরাদ্দ দেয়। ২০১১ সালে সেই প্লটটি বুঝে নিতে চাইলে রাজউক থেকে বলা হয়, ২২ নম্বর প্লটটি তাকে দেওয়া যাবে না। প্লটটি ৩২ নম্বর প্লটের বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে। আর ৩২ নম্বর প্লটটিও আবুল বাশারকে দেওয়া সম্ভব না। কারণ ৩২ নম্বর প্লটও আরেক ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে। পরে রাজউক আরেকটি চিঠিতে জানায়, তাকে একই সড়কের ১২ নম্বর প্লট দেওয়া হয়েছে, দ্রুত সেটি রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। তিনি তখন দেশে ফিরে রাজউকের একজন কানুনগোকে নিয়ে পূর্বাচলে যান। তাকে প্লটটি মেপে দেখানো হয়। এরপর প্লটটি রেজিস্ট্রির জন্য নথি তল্লাশি করা হলে তাকে জানানো হয়, ওই প্লটের কোনো ফাইল রাজউকে নেই।

আবুল বাশার জানান, এ ঘটনার পর তিনি রাজউকের একজন সিবিএ নেতার সাহায্যে ওই নথির সন্ধান পান। এ পর্যায়ে তাকে কিছু দিন পর যোগাযোগ করতে বলা হয়। গত বছর তিনি দেশে ফিরে প্লটটি রেজিস্ট্রি করে নিতে চাইলে রাজউক জানায়, ১২ নম্বর প্লটটি আরেক ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে। আবুল বাশার তখন পূর্বাচল প্রকল্পের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামের এক বন্ধুকে নিয়ে তার কাছে যান। এ পর্যায়ে আবুল বাশারকে একটি প্লট দেওয়া হলেও সেটার লোকেশন একেবারেই সাধারণ। লন্ডনে হেনজি স্ট্রিটে বসবাসরত আবুল বাশার তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে জানান, গত ১৫ বছরে প্লটের জন্য তিনি নানা কাজ বাদ দিয়ে প্রায় ২০ বার দেশে এসে রাজউকে ধরনা দিয়েছেন। প্রতিবারই তিনি নির্ধারিত সময়ে লন্ডনে ফিরতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে তার বিপুল আর্থিক ক্ষতিও হয়েছে।

পূর্বাচল প্রকল্পের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম বলেন, দালালচক্র ও রাজউকের কিছু ছোট ছোট কর্মচারীর কারণে রাজউকের দুর্নাম হয়। এ জন্য তিনি পূর্বাচল সেলের ফটকে নিরাপত্তাকর্মী বসিয়েছেন, যাতে কোনো দালাল ঢুকতে না পারে। তিনি জানান, তার কাছে কোনো ফাইল গেলে তা তিনি সেই দিনই ছেড়ে দেন। তার টেবিলে কোনো ফাইল থাকে না। তিনি কোনো গ্রাহককে প্লট-সংক্রান্ত কোনো কাজে অর্থ লেনদেন না করার অনুরোধ জানান।

রাজউকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইদ নূর ইসলাম বলেন, গ্রাহকের ভোগান্তি নিরসনে তারা এখন সব কিছুই অনলাইনে করছেন। তবে রেজিস্ট্রির সময় স্বাক্ষর দিতে বরাদ্দপ্রাপ্তকে আসতেই হবে। কারণ স্বাক্ষর মেলানো বা ছবি মেলানোর একটা ব্যাপার রয়েছে। না হলে দালালচক্র সেখানে আরেকজনের ছবি বসিয়েও প্লট আত্মসাৎ করতে পারে।

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল টরন্টোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল টরন্টোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ উদযাপন করা হয়। কনসাল জেনারেল মোঃ লুৎফর রহমান কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু হয়। এরপর বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সূচিতে ছিল বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বানী পাঠ, বক্তব্য উপস্থাপন, কেক কাটা,চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরন, সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশেষ মোনাজাত।

কনসাল জেনারেল জনাব মোঃ লুৎফর রহমান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শিশু কিশোর কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।তিনি বলেন ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ পরিবারে বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহন করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন নির্ভীক এবং পরোপকারী। তিনি শিশুদের ভীষণ ভালবাসতেন। আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পেরেছি। মহান নেতার জীবন ও আদর্শ অনুসরণে এ দেশের শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

সর্বশেষে জাতির পিতার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে, আগামী দিনের কর্ণধার শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দেশের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

 

- Advertisement -

Latest Posts

Don't Miss

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.