‘দৃষ্টি আকর্ষণ: লেটুস পাতার ঘাটতির কারণে আমাদের আজকের স্যান্ডউইচে কোনো লেটুস পাতা থাকছে না।’ ইটোবিকোকের স্যানরেমো বেকারিতে বৃহস্পতিবার যারা ঢু মেরেছেন, তাদের সবার চোখই আটকে গেছে এই ঘোষণাটিতে।
সরবরাহ সংকট ও চড়া দামের কারণে টরন্টোজুড়ে যেসব রেস্তোরাঁ লেটুস ব্যবহার করছে না অথবা মেন্যু থেকে এটি বাদ দিচ্ছে এই রেস্তোরাঁটিও তাদের একটি। স্যানরেমো বেকারির মালিক রবার্ট বোজো বৃহস্পতিবার বলেন, উপাদানটি না পেলে তা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে। আপনারা জানেন যে, কিছু পণ্যকে আপনাকে বাদ দিতেই হচ্ছে। আমরা যে খেলাটি বর্তমানে খেলছি তার মধ্যে একটি ভারসাম্য আনার চেষ্টা এটি।
সাবওয়েও তাদের কিছু রেস্তোরাঁয় সাময়িকভাবে লেটুস না থাকার কথা জানিয়েছে। আর সুইস শ্যালের কানাডিয়ান শাখা বলেছে, তাদের গার্ডেন ও সিজার সালাদ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সরবরাহ সংকটের কারণেই লেটুসের এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। রেস্টুরেন্ট কানাডার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা কেলি হিগিনসন দ্য কানাডিয়ান প্রেসকে বলেন, উষ্ণ অঞ্চলের লেটুস উৎপাদনকারী প্রধান প্রধান এলাকাগুলোতে ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর ফলে তাদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
ডালহৌসির এগ্রি-ফুড অ্যানালিটিকস ল্যাবের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সিলভাইন শার্লেবোয়িস বলেন, সরবরাহ সমস্যার কারণে কানাডাতে লেটুসের দাম এক বছর আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। লেটুসের যে সংকট চলছে, অনেকেই সেটা লক্ষ্য করেছেন বলে আমার মনে হয়। এবং ক্যালিফোর্নিয়া বছরের এই সময়টাতে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতে না পারায় আমাদের কাছে এর মজুদ নিঃশেষ হয়ে গেছে। তবে এ সমস্যা সাময়িক। ছুটি ঘনিয়ে আসায় আমরা অর্থপূর্ণ একটি ডিসেম্বর পাবো বলে আশা করছি।
গত কয়েক সপ্তাহে লেটুসের দাম এতটাই বেড়েছে যে, এক কেস রোমেইন লেটুসের জন্য বোজোকে ১২৫ থেকে ১৪০ ডলার মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। লেটুসের পাশাপাশি তার রেস্তোরাঁ সবজির উচ্চ মূল্যও পরিশোধ করতে পারছে না বলে জানান তিনি।
উচ্চ মূল্যস্ফতির কারণে কানাডিয়ানরা গ্রোসারিতে নজিরবিহীন ব্যয় করার মধ্যেই লেটুসের এই সংকট দেখা দিল। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে দোকানে মুদিপণ্যের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, ১৯৮১ সালের পর যা সবচেয়ে বেশি। অক্টোবরেও এ ধারা অব্যাহত থাকে এবং দাম বাড়ে ১১ শতাংশ। যদিও অক্টোবরে খাদ্যের দাম সেপ্টেম্বরের তুলনায় কম বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে খাদ্যের দাম ১০ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়লেও অক্টোবরে বেড়েছে ১০ দশমিক ১ শতাংশ।
অক্টোবরে সবেেচয় বেশি দাম বেড়েছে মারগারিনের ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে পাস্তার ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের তুলনায় আর যেসব খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে তার মধ্যে আছে বাটার, ডেইরি ও ডিম।