যাত্রী সন্তুষ্টির বিবেচনায় উত্তর আমেরিকার বৃহৎ বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় নিকৃষ্ট বিমানবন্দর হিসেবে উঠে এসেছে টরন্টো পিয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের নাম। জে.ডি পাওয়ারের বার্ষিক নর্থ আমেরিকান এয়ারপোর্ট স্যাটিসফেকশন প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাত্রী সন্তুষ্টিতে উত্তর আমেরিকার বড় আকারের ২১টি বিমানবন্দরের মধ্যে কানাডার ব্যস্ততম বিমানবন্দরটির অবস্থান দাঁড়িয়েছে ২০তম। এক হাজারের মধ্যে বিমানবন্দরটির প্রাপ্ত স্কোর ৭৪৯। সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিমানবন্দরের তকমা জুটেছে নিউ জার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের।
মোট ছয়টি বিষয়ের ওপর স্কোরিং করা হয়েছে এবং গুরুত্বের ক্রমানুসারে সেগুলো হলো টার্মিনাল সুবিধা, বিমানবন্দরে আগম ও নির্গমন, ব্যাগেজের দাবি, নিরাপত্তা পরীক্ষা, চেক-ইন ও ব্যাগেজ পরীক্ষা, ফুড, বেভারেজ এবং খুচরা সেবাসমূহ। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার মোট ২৭ হাজার ১৪৭ জন ভ্রমণকারীর ওপর গবেষণাটি করা হয়। এসব যাত্রীদের যুক্তরাষ্ট্র অথবা কানাডার অন্তত একটি বিমানবন্দরে অবতরণের এবং সেখান থেকে যাত্রা করার অভিজ্ঞতা হয়েছে।
জে.ডি. পাওয়ারের ট্রাভেল ইন্টেলিজেন্সের নেতা মাইকেল টেইলর সিটিভি নিউজ টরন্টোকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরের এই অবনমনে ভূমিকা রেখেছে ২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যাত্রীদের ঢল।
২০২২ সালের একই সমীক্ষায় টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরের অবস্থান ছিল বৃহৎ আকৃতির ২০টি বিমাবন্দরের মধ্যে ১৬তম। মাইকেল টেইলর বলেন, এত বিপুল সংখ্যক যাত্রীদের সবাইকে খুশি রাখা কঠিন কাজ। এ অবস্থায় স্কোর ভালো করা সত্যিই কঠিন। এ কারণেই পিয়ারসন বিমানবন্দরে যাত্রী অসন্তোষ বেড়েছে।
টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরের স্কোর এত কম হওয়ার মূল কারণ হিসেবে বিপুল সংখ্যক যাত্রী এবং দীর্ঘ অপেক্ষমাণ সময়কে দায়ী করেন টেইলর।
গবেষণা অনুযায়ী, যাত্রী সন্তুষ্টিতে শীর্ষে রয়েছে যে তিনটি বিমানবন্দর সেগুলো হলো ডেট্রয়েট মেট্রোপলিটন ওয়েন কাউন্টি এয়ারপোর্ট, মিনিয়াপোলিস-সেইন্ট পল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এবং লাস ভেগাসের হ্যারি রিড ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। ক্যালগেরি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বড় এয়ারপোর্টের শ্রেণিতে ২৭টি বিমানবন্দরের মধ্যে দশম স্থান লাভ করেছে।
তবে জিটিএএর পক্ষে পোলারা পরিচালিত সমীক্ষায় পিয়ারসন বিমানবন্দর সম্পর্কে যাত্রীদের কাছ থেকে এর চেয়ে ইতিবাচক মন্তব্য পাওয়া গেছে। পোলারার চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার ড্যান আরনল্ড বলেন, গত গ্রীষ্মের দীর্ঘ অপেক্ষমাণ সময় এবং তুষাঝড়ের সময় বিলম্ব সত্ত্বেও সম্প্রতি ভ্রমণকারী অধিকাংশ কানাডিয়ান তাদের ভালো অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৭৫ শতাংশ যাত্রী টরন্টো এয়ারপোর্টে পাওয়া সেবা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। গত ৯০ দিনের মধ্যে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া যাত্রীরাও একই মতামত দিয়েছেন।
গত ২৯ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৩২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক যাত্রীর ওপর সমীক্ষাটি চালানো হয়। এই সমীক্ষায় ৩৮ শতাংশ কানাডিয়ান বিমানবন্দরটি সম্পর্কে অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। বিমানবন্দরটি সম্পর্কে যারা নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন তাদের তুলনায় সংখ্যাটি চারগুন বেশি।