কানাডার শ্রমবাজারে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ১ লাখ ৪ হাজার কর্মসংস্থান যোগ হয়েছে। এর ফলে অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন, অর্থনৈতিক শ্লথতার কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।
এই তথ্য এই মাসে সম্ভাব্য সুদের হার বৃদ্ধির মঞ্চ তৈরি করে দিতে পারে।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, গত মাসে দেশেল বেকারত্বের হার সামান্য কমে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত চার মাসের মধ্যে এই নিয়ে টানা তিন মাস বেকারত্বের হার হ্রাস পেলো। বর্তমানে বেকারত্বের হার গত জুন ও জুলাই মাসের রেকর্ড সর্বনি¤œ অর্থাৎ ৪ দশমিক ৯ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
বিএমওর প্রধান অর্থনীতিবিদ ডগলাস পর্টার বলেন, একক কোনো কানাডিয়ান কর্মসংস্থান প্রতিবেদনের তথ্য সম্পর্কে আপনাকে সব সময়ই কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু গত তিন মাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার অর্থনীতিতে ১ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হলো, ঐতিহাসিকভাবে এটি বড় সংখ্যা।
সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা বলেছে, পূর্ণকালীন কাজের কারণে কর্মসংস্থানের হার বেড়েছে। বেসরকারি খাতের কর্মসংস্থানও গত মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে খাতভিত্তিকও কর্মসংস্থান বেড়েছে। তবে সরকারি খাতের কর্মসংস্থানের ছবি একইরকম রয়েছে।
সুদের হার বৃদ্ধির কারণে অনেক অর্থনীতিবিদ চতুর্থ প্রান্তিকের উপাত্তে অর্থনৈতিক মন্দার চিত্র পাওয়া যাবে বলে মনে করে ছিলেন। যদিও কর্মসংস্থানের চিত্র বলছে, অর্থনৈতিক মন্দার কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। পর্টার বলেন, আমাদের মধ্যে যারা এ বছর কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলছেন, এই তথ্য সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে অবশ্যই কিছুটা সংশয় এনে দেবে।
মজুরি বৃদ্ধি টানা সপ্তম মাসের মতো ৫ শতাংশের ওপরে বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিসেম্বরে মজুরি বেড়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। তারপরও মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো দেশের মূল্যস্ফীতির হারের নিচে রয়েছে। নভেম্বরে কানাডায় বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
নিয়োগদাতা ওয়েবসাইট ইনডিডের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ব্রেন্ডন বার্নার্ড বলেন, বেকারত্বের নি¤œ হার ও শক্তিশালী কর্মসংস্থান বাজার ২০২২ সালের শেষ অংশ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ডিসেম্বরে কর্মসংস্থান বেড়েছে এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হারানো চাকরি পুনরুদ্ধার হয়েছে। এছাড়া ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে কর্মসংস্থানের হার গত মাসে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
পর্টার বলেন, মাসিকভিত্তিতে কর্মসংস্থানের হার বাড়লেও ঘণ্টাভিত্তিক কাজ একইরকম রয়েছে। এর কারণ মূলত অসুস্থতার হার বেড়ে যাওয়া।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, অসুস্থতা বা অসামর্থের কারণে গত মাসে ৮ দশমিক ১ শতাংশ কর্মী কাজে অনুপস্থিত ছিলেন, নভেম্বরে যা ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।