
সহিংসতায় ইউক্রেনের বিচার ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি সেভোলড নিয়াজিয়েভ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুদ্ধপরাধের হাজারো প্রতিবেদন ব্যবস্থাপনা করতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট।
অটোয়া কনফারেন্সে উপস্থাপন করা এক প্রেজেন্টেশনে ইউক্রেনের প্রধান বিচারপতি বলেন, এ বছরের শুরুর দিকে রাশিয়া আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনের এক-দশমাংশের বেশি আদালত ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অথবা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিচারকরাও রুশ দখলদারদের কাছ থেকে হুমকির শিকার হচ্ছেন।তবে প্রাতিষ্ঠানিক শূন্যতা পূরণে এবং অপরাধীদের যুদ্ধপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনতে বিচার ব্যবস্থা তার সর্বোচ্চটা করছে।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর জুডিশিয়াল ট্রেইনিংয়ে তিনি বলেন, আমাদের জীবন অনেকটাই বদলে গেছে। এটা এখন যুদ্ধের আগে ও যুদ্ধের পরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। খুব সকালে উঠেই আমরা খবরগুলো দ্রুত পড়ে নিই। জেনারেল স্টাফদের কাছ থেকে সর্বশেষ খবরটি না শুনে আমরা ঘুমাতে যায় না।
ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ের সাম্প্রতিক উপাত্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউক্রেনের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় রুশদের ৪২ হাজার যুদ্ধপরাধের ঘটনা নিবন্ধিত হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা ৮০ হাজারের মতো। বর্ধিত প্রতিবেদনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে বিচার ব্যবস্থা। তবে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেছে। মিসাইল ও বোমা হামলায় ১১ শতাংশ আদালত ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউক্রেনের বিচারকরা অধিকৃত এলাকা ছাড়তে পারছেন না। রাশিয়ার সেনাবাহিনী থেকে লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।
তিনি বলেন, অন্য বিচারকদের ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কিছু বিচারককে গ্রেপ্তার ও তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদেরকে বিচার প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে রাশিয়ান সৈন্যরা। বিচার ব্যবস্থার সদস্যের পক্ষে নথিপত্র ধ্বংসের জন্যও অনেকেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শূন্যতা পূরণে ৪০০ এর বেশি নতুন ও বিদ্যমান বিচারককে দেশেল বিভিন্ন অঞ্চলে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধের আগেই ২ হাজার বিচারকের ঘাটতিতে ছিল দেশের বিচার ব্যবস্থা।