
প্রথমবারের মতো কানাডিয়ান কোম্পানির প্রস্তুতকৃত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে হেলথ কানাডা। প্ল্যান্টভিত্তিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি ভ্যাকসিনের এটিই প্রথম অনুমোদন।
কোভিফেঞ্জ নামে পরিচিতি ভ্যাকসিনটি উন্নয়ন করেছে কুইবেক সিটিভিত্তিক বায়োটেকনোলজি কোম্পানি মেডিকাগো। তারা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তার জন্য ভাইরাসের মতো পার্টিকেল তৈরি করতে পারে এমন প্ল্যান্ট হোস্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
হেলথ কানাডার চিফ মেডিকেল অ্যাডভাইজার ডা. সুপ্রিয়া শর্মা বলেন, ভাইরাস সদৃশ পার্টিকেলগুলো টোব্যাকো গাছের মতো গাছে বড় হয়, যা স্বল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ ভাইরাস উৎপাদন করতে পারে। একবার এই পার্টিকেলগুলো শরীরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে তা ইমিউন সিস্টেমকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করে।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ২১ দিনের ব্যবধানে দুই ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হলে দ্বিতীয় ডোজের পর কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ৭১ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। ৩০ হাজার মানুষ এই ট্রায়ালে অংশ নেন এবং গুরুতর অসুস্থদার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনটি শতভাগ কার্যকর।
মেডিকাগোর ভ্যাকসিনটি ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের ওপর প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে হেলথ কানাডা। তবে ১৮ বছরের কম ও ৬৪ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা এখনও জানা যায়নি।
ডা. শর্মা বলেন, বয়স্কদের ওপর উপাত্ত সংগ্রহের কাজ করছে মেডিকাগো। কোম্পানির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। কারণ, ট্রায়ালের সময় এই বয়সী অনেকেই আগেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
বর্তমানে আধিপত্যকারী ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের আগেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি চালানো হয়। শর্মা বলেন, ট্রায়ালটি যখন চালানো হয় তখন আলফা, গামা, ল্যাম্বডা, ডেল্টা ও মু ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছিল।
উল্লেখ্য, মেডিকাগো ও ব্রিটিশ ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলা গত ডিসেম্বরে হেলথ কানাডার কাছে জমা দেয়। শর্মা বলেন, মৃদু কিছু পাশর্^প্রতিক্রিয়া, যা সব ভ্যাকসিনেই দেখা যায় তা মেডিকাগোর ট্রায়ালেও পাওয়া যায়। তবে গুরুতর কোনো পাশর্^প্রতিক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মেডিকাগোর ভ্যাকসিন হলো হেলথ কানাডা অনুমোদিত ষষ্ঠ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। এর আগে যে পাঁচটি ভ্যাকসিন হেলথ কানাডা অনুমোদন দিয়েছে সেগুলো হলো এমআরএনএ ভ্যাকসিন ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্না, ভাইরাল ভেক্টর ভ্যাকসিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও জনসন অ্যান্ড জনসন এবং প্রোটিন সাব-ইউনিট ভ্যাকসিন নোভাভ্যাক্স।