যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে ট্রুডো সরকার। যদিও ভ্যাকসিনেশনে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে কানাডা।
আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, কীভাবে সীমান্ত খুলে দেওয়া যায় তা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন। সীমান্ত দিয়ে যাতায়াতকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন ও পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা শিথিল করা হবে কিনা সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিশে^র দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক সীমান্তটি ২০২০ সালের মার্চ থেকে অনাবশ্যক ভ্যমণকারীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে স্থল ও আকাশপথে যাত্রী চলাচল নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। এ বিধিনিষেধের বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে কানাডার পর্যটন খাতে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এয়ালাইন্সগুলো। এক হিসাব বলছে, এ বিধিনিষেধের ফলে গত বছর এ খাতগুলো ১ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার রাজস্ব হারিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত কানাডার সাবেক রাষ্ট্রদূত মাইকেল কারগিন বলেন, শেষ পর্যন্ত এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং কানাডাই এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা পক্ষ। কোন শ্রেণির মানুষের জন্য সীমান্ত খোলা হবে কানাডাকে সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়ার নীতি যুক্তিসম্মত হবে।
সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ কানাডাকে বিপর্যস্ত করে তোলে। কারণ, সরবরাহ ইস্যু ও জাহাজীকরণে বিলম্বের ফলে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি শ্লথ হয়ে পড়ে। ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিতে গতি এলেও কানাডার অনেক প্রদেশ লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের মধ্যে আলোচনা সবে শুরু হয়েছে এবং সীমান্ত সম্ভবত এখনই খুলে দেওয়া হচ্ছে না। ব্লুমবার্গের ভ্যাকসিন ট্র্যাকার অনুযায়ী, এক ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছেন ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ কানাডিয়ান। দুই ডোজের ভ্যাকসিনই পেয়েছেন মাত্র ২ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ নাগরিক এরই মধ্যে এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন। দুই ডোজই পেয়েছেন ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের আগ পর্যন্ত সিংহভাগ কানাডিয়ানের উভয় ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে ভ্যাকসিনেশন সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাইয়ের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা তৈরি হতে পারে। ট্রুডো বলেছেন, ভ্যাকসিন পাসপোর্টের বিষয়টি উন্মুক্ত রেখেছে কানাডা। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ভ্যাকসিন পাসপোর্টের প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছে। বিষয়টি তারা বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান যেমন কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।