অটোয়া এলাকার একটি লং-টার্ম কেয়ার হোমে শনিবার বাবার সঙ্গে দেখা করতে যান এসথার হ্লাদকোভিচ। গত ১০ মাসের মধ্যে এটাই বাবার সঙ্গে তার প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ, যেখানে মাঝখানে কোনো প্রতিবন্ধক ছিল না। দেখা তো হয়েছেই, ৯০ বছর বয়সী বাবাকে ছুঁয়েছেন, আলিঙ্গনও করেছেন।
হ্লাদকোভিচ বলছিলেন, বাবার কাছ থেকে যে আওয়াজটা শুনেছি তা অনেকটা আহত প্রাণির মতো। আমি একটুও মিথ্যা বলছি না। পরিবারের কোনো সদস্যের একটু স্পর্শ পেতে দীর্ঘদিন তিনি অপেক্ষা করে ছিলেন। তাকে ছোঁয়ার পর আমি কান্না ধরে রাখতে পারিনি। বাবাকে সচরাচর কাঁদেন না। কিন্তু তার চোখও ভেজা দেখেছি সেদিন।
হ্লাদকোভিচের বাবা ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন এবং লং-টার্ম কেয়ার হোমের বাসিন্দাদের মধ্যে উচ্চ হারে ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার সুযোগ দিতে প্রাদেশিক সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছিলেন তিনি। শুক্রবার সরকার সেই সুযোগ দেয়ার কথা ঘোষণা করে, শনিবার থেকে যা কার্যকর হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্তও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন সাক্ষাৎ হতে হবে আউটডোরে এবং একসঙ্গে দুইজনের বেশি অতিথি থাকতে পারবেন না। সেই সঙ্গে মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং যারা এখনও পুর্ণাঙ্গভাবে ভ্যাকসিনেটেড হননি তাদের ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্বের প্রটোকল মেনে চলতে হবে।
সে মোতাবেক শনিবার সকাল ১০টায় বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য নাম নিবন্ধন করেন হ্লাদকোভিচ। সঙ্গে তার মেয়েও ছিলেন এ সময়। তার কথায়, এটা ছিল মিশ্র অনুভূতি। তিনি যে আমাদের সামনে আছেন, এটা বিশ^াসই হচ্ছিল না। আমরা তার কানে কানে কথা বলেছি। তাকে স্পর্শ করেছি। তাকে যে আমরা কতটা ভালোবাসি ও চাই সেটাও বলেছি। এক ঘণ্টা পর মনে তাকে মনে হচ্ছিল যেনো আলো-জল পাওয়া কোনো ফুল। তারপরও সাক্ষাৎটি ছিল অম্লমধুর।
লং-টার্ম কেয়ার মন্ত্রণালয়ের নিয়মে পরিবর্তনের এই ঘোষণা দিয়েছে মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় হাতে রেখে। তাই অনেক লং-টার্ম কেয়ার হোম শনিবারও বাসিন্দাদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি। অনেকে নাম নিবন্ধন করলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়। এদের একজন অটোয়ার বাসিন্দা লরা রিভেস্ট, যার মা রয়েছেন টরন্টোর একটি লং-টার্ম কেয়ার হোমে।
তিনি বলছিলেন, কেয়ার হোমগুলোর পরিকল্পনা সেটা শোনার অপেক্ষায় আছি আমি। খবর পাওয়ামাত্রই আমি নাম নিবন্ধন করব। আশা করি আমি আমার মায়ের সঙ্গে সশরীরে সাক্ষাতের সুযোগ পাব। নিয়ম-কানুন আরেকটু শিথিল হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। খবর: দ্য কানাডিয়ান প্রেস।