মডার্নার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে এটা জানতে পেরে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্লিনিকে গিয়েও অনেকে ফিরে আসছেন। এটা জানতে পেরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন গবেষক ও ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক কেলি গ্রিনড্রড। তিনিসহ অন্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ফাইজার-বায়োএনটেকের তুলনায় একই জাতীয় অন্য ভ্যাকসিনকে অনেকে কম কার্যকর মনে করছেন।
গ্রিনড্রড বলেন, মডার্নার ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম অন্টারিও অঞ্চলের একটি ক্লিনিক থেকে প্রায় ৫০ জন বেরিয়ে এসেছেন। পাশর্^বর্তী অন্যান্য ভ্যাকসিনেশন সেন্টারেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। মডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা একই রকম হওয়া সত্ত্বেও এমনটা হচ্ছে।
তবে প্রবেশপথে চিকিৎসক বসানোর পর এ প্রবণতা কিছুটা কমেছে। কারণ, দুটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাই যে একই রকম আগ্রহীদের তা বোঝাচ্ছেন তারা। গ্রিনড্রড বলেন, প্রথমে মনে হয়েছিল, হচ্ছেটা কি? এখন তারা লোকজনের কাছে বিষয়টি ভালোমতো ব্যাখ্যা করতে পারছেন। তারা বলছে, দেখুন, দুটি ভ্যাকসিনই একই রকম।
দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দুই সপ্তাহ পর কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে মডার্নার ভ্যাকসিনের ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ কার্যকারিতা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রমাণিত হয়েছে। পক্ষান্তরে ফাইজারের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে ৯৫ শতাংশ। দুটি ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হার শূন্য পাওয়া গেছে। সব এমআরএনএ ভ্যাকসিনের পাশর্^প্রতিক্রিয়াই একই রকমের। তাহলে কেন মানুষ মডার্নার ভ্যাকসিনের প্রতি অনাগ্রহী হচ্ছেন ? ব্র্যান্ড সচেতনতার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে মনে করেন গ্রিনড্রড।
তিনি বলেন, ফাইজার মানুষের কাছে অনেক বেশি পরিচিত নাম। আগের ওষুধ বিশেষ করে ভায়াগ্রার বিপণনের কারণেই এটা তারা অর্জন করেছে। অন্যদিকে ১০ বছর বয়সী বায়োটেক কোম্পানি মডার্না এখনও কানাডিয়ানদের কাছে সেভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেনি। মডার্নার ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে আছেন তরুণ কৃষ্ণাঙ্গ বিজ্ঞানী কিজিমেকিয়া করবেট এবং এটা একটা দারুণ গল্প।
মডার্নার কথা শোনার পর ভ্যাকসিন না নিয়েই বেরিয়ে আসার ঘটনা ঘটেছে আলবার্টাতেও। ফার্মাসিস্ট ও ভ্যাকসিন ক্লিনিকগুলো থেকে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. লিনোরা স্যাক্সিঙ্গার তা জানতে পেরেছেন। গ্রেটার টরন্টোতেও একই ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন মিসিসোগার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুমন চক্রবর্তী। তবে ম্যানিটোবাতে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কিছু হয়নি বলে দাবি করেছেন প্রদেশের একজন মুখপাত্র।
কানাডায় এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিনের যে সরবরাহ হয়েছে তার মাত্র ২২ শতাংশ মডার্নার। ফাইজারের কাছ থেকে কানাডা ১ কোটি ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেলেও মডার্নার কাছ থেকে পেয়েছে ৫৫ লাখ ডোজ।