
আগামী ২৬ জুন টরন্টোর সিটির মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাবেক টরন্টো সিটি কাউন্সিলর আনা বাইলাও এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন। জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র। এর মধ্য দিয়ে জমে উঠেছে চরন্টোর আসন্ন মেয়র নির্বাচন।
জন টরি মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর এই পদের জন্য বাইলাওকে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বলা হচ্ছিল। দুই সপ্তাহ আগে তিনি বলেছিলেন, মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা তিনি ভাবছেন।
সাপ্তাহিক বাংলামেইলের মুখোমুখি হন তিনি। একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন তার পরিকল্পনার কথা।
আনা বাইলাও বলেন, আমি এই শহরকে ভালোবাসি এবং আমার বাবা-মা এই শহরে আমাকে বড় করেছেন ও আজও আমি এই শহরকে আমার বাড়ি বলতে পারায় আমি কৃতজ্ঞ। আমি যখন আসি তখন নিরাপত্তা ও সম্ভাবনার একটা বোধ আমার মধ্যে কাজ করে। এগুলোই সম্ভবত আমি যে এখানকার সেই বোধ আমার মধ্যে জাগিয়ে দেয়। অনেকেই এভাবে বিষয়টি ভাবে না। লোকজন মনে করে সেবাগুলো তারা পাচ্ছে না।
উদাহরণ হিসেবে টিটিসির কথা উল্লেখ করেন তিনি। বাইলাও বলেন, টিটিসির ওপর আমাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। এই বাহনকে নিরাপদ রাখতে হবে। পাশাপাশি লোকজনকে যেনো বাসের জন্য আধা ঘণ্টা ধরে অপেক্ষায় থাকতে না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রদেশের কাছ থেকে টরন্টো যাতে ন্যায্য হিস্যা পায় সেটা নিশ্চিত করা আমার আরেকটি অগ্রাধিকার।
সাবেক ডেপুটি মেয়র বাইলাও এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বারো বছর আমি সিটি কাউন্সিলর ছিলাম। ডেপুটি মেয়র ছিলাম পাচঁবছর। সিটি প্রশাসনে কাজের অভিজ্ঞতা আমার দারুণ। এই অভিজ্ঞতাকেই আমি আগামীতে কাজে লাগাতে চাই।
তিনি বলেন, টরন্টোতে ২ লাখ ৮০ হাজার নতুন বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্য অর্জনে প্রদেশের সঙ্গে কাজ করতে চাই। একাধিক সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী থাকলেও প্রতিযোগিতা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই।
আনা বাইলাও বলেন, আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। লিডারশীপ কোয়ালিটিও রয়েছে। আমি জানি এই সিটিকে কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে। সিটিবাসীর প্রয়োজনগুলো বেশ ভালো জানা আমার। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সহজলভ্য করাই হবে আমার প্রধান দায়িত্ব। আমি ডিভিপি ও গার্ডেনার রিবিল্ডের পক্ষে। প্রভিন্সের সঙ্গে সবসময় ফেয়ার ডিলে থাকবো আমি।
তিনি বলেন, টরন্টো কমিউনিটি হাউজিং সবচেয়ে বড় ল্যান্ডলর্ড। ১ লক্ষ ১০ হাজার বাসিন্দা টরন্টো কমিউনিটি হাউজিংয়ে বসবাস করে। ইউনিটগুলো যাতে সবসময় ভালো কন্ডিশনে থাকে সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে ২.৬ বিলিয়ন ডলার আমরা গ্রহণ করেছি। এই ফান্ড ব্যবহার করে কমিউনিটি হাউজিং কে আরো বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছি এবং প্রতিটি ইউনিট বসবাসের যোগ্য ও আধুনিক করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।
অপর এ প্রশ্নের জবাবে আনা বলেন, বাসিন্দারাই সিটির সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাদের জন্যে আধুনিক আবাসন, নিরাপদ ও সহজলভ্য টিটিসি, পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করাই আমার লক্ষ্য। এ সংক্রান্ত আমার বিস্তারিত প্লান রয়েছে।
বাইলাও ড্যাভেনপোর্টের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করেন টানা ১২ বছর। প্রার্থীতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি বিরতি শেষে রাজনীতিতে আবার তার প্রবেশ ঘটলো। পুনরায় নির্বাচন না করার ইচ্ছা পোষণ করে গত বছর সিটি হল থেকে বিদায় নেন তিনি। ১২ বছরের দায়িত্বকালে বাইলাও নগরীর আবাসন পরামর্শকও ছিলেন। সাবেক মেয়র জন টরির গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন। টরন্টোর বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, টরন্টো তথা কানাডার অর্থনীতিতে বাংলাদেশি কানাডিয়ানরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিজস্ব কৃস্টি-কালচারারের বিকাশের মাধ্যমে টরন্টো সিটিকে সমৃদ্ধ করেছে। তাদের জন্যে সবসময় আমার শুভ কামনা। আমি আশা করি, মেয়র নির্বাচিত হলে তাদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ পাবো আমি।