
আগেভাগেই দায়িত্ব ছাড়তে চান বলে জানিয়েছেন কানাডায় নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রনেন হফম্যান। ইসরায়েলে সরকারে পরিবর্তন আসার পর বিতর্কিত নতুন নীতিকে ঘিরে তেল আবিবে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন তিনি।
নতুন সরকারের অধীনে নীতিতে পরিবর্তন আসায় এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন হফম্যান। এক টুইটে তিনি বলেন, ইসরায়েল নতুন সরকার ও ভিন্ন ধরনের নীতির দিকে যাওয়ায় আমার ব্যক্তিগত ও পেশাগত সততা দায়িত্ব সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য করছে এবং এই গ্রীষ্মেই ইসরায়েলে ফিরে যাবো। এ বছরের শেষ দিকে কেউ আমার স্থলাভিষিক্ত না হওয়া পর্যন্ত কানাডায় আমি একই আনন্দ ও আগ্রহ নিয়ে কাজ করে যাবো।
কানাডায় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত হিসেবে হফম্যান নিয়োগ পেয়েছেন মাত্র এক বছর আগে। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি ভিন্ন ধরনের নীতির কথা বললেও তা ব্যাখ্যা করেননি। অটোয়ায় ইসরায়েলের দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এর সঙ্গে আর কিছু যোগ করার নেই।
এর আগে গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে ফ্রান্সে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ইয়ায়েল জার্মানও প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের প্রতিবাদে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। অন্য দলের সহযোগিতায় নেতানিয়াহু আবারও ক্ষমতায় ফিরেছেন এবং এই সরকারকে বলা হচ্ছে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে দক্ষিণপন্থী।
সেন্টার ফর ইসরায়েল অ্যান্ড জুইশ অ্যাফেয়ার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিমন ফোগেল হফম্যানকে অসাধারণ ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যিনি ব্যক্তিগত মতামতের সঙ্গে আপোষ করতে চান না। ফোগেল বলেন, তিনি ভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক ধারা থেকে এসেছেন এবং সরকারের গতিবিধি নিয়ে যারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনিও তাদের সঙ্গে রয়েছেন। হফম্যানের নিয়োগ রাজনৈতিক এবং তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন আগের সরকারের মাধ্যমে। তাই জাতীয় নির্বাচনের পর এ ধরনের রাষ্ট্রদূতদের পদত্যাগ করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তিনি যে গ্রীষ্মের শেষ পর্যন্ত থাকছেন এটাই বড় ঘটনা। কিছুটা হলেও পারস্পরিক সম্মান যে আছে সেটাই ইঙ্গিত করছে এটি।
হফম্যানের বিবৃতি রাজনৈতিক হলেও পরিস্কার বলে মন্তব্য করেছেন বোর্ড অব জেস্পেসকানাডার চেয়ার জো রবার্টস। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে কানাডার গভীর এবং জটিল সম্পর্কের নিরিখে এটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
নেতানিয়াহু সরকারের বিচারব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর প্রতিবাদে হাজার হাজার ইসরায়েলি শনিবার রাতে রাজধানী তেল আবিবে জড়ো হন। দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি ধুলিষ্যাৎ করতেই এই পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে বিরোধীরা। পুলিশের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, প্রায় ১ লাখ মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।