
উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কানাডাজুড়ে ফুড ব্যাংকগুলো চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। ২০২৩ সালটাও একই রকম যাবে বলে মনে করছে তারা।
ছুটির মৌসুম শেষ হয়ে আসায় এসব ফুড ব্যাংকের কেউ কেউ জনগণকে দারিদ্র থেকে বের করে আনতে পদ্ধতিগত পরিবর্তনের পক্ষে কথা বলতে কানাডিয়ানদের উদ্বুদ্ধ করছে। তারা বলছে, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা যেহেতু আয়বৈষম্য ও সাশ্রয়ী আবাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই ফুড ব্যাংকের সক্ষমতা বৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হতে পারে না।
এডমন্টন’স ফুড ব্যাংকের স্ট্র্যাটেজিক রিলেশনশীপ অ্যান্ড পার্টনারশীপের ব্যবস্থাপক টামিস্কান বেঞ্জ-নাইট সিটিভি নিউজ চ্যানেলকে বলেন, ব্যক্তি ও সংগঠন হিসেবে উৎসবের মৌসুম এতোটা কঠিন হতে আগে কখনো দেখিনি আমরা।
চাহিদার কারণে এডমন্টন’স ফুড ব্যাংককে বর্তমানে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াম তাপমাত্রার মধ্যেও ড্রাইভ-থ্রু সেবা খোলা রাখতে হচ্ছে। বেঞ্জ-নাইট বলেন, লোকজন যথেষ্ট উদার নয়, এমনটা বলা যাবে না। বিষয়টি হচ্ছে চাহিদার ব্যপ্তি। আগের বছর যারা নিজেরাই নিজেদের খাবারের সংস্থান করতে পারতেন, এখন তাদেরকে ফুড ব্যাংকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ফুড ব্যাংক প্রতি মাসে ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে সেবা দিচ্ছে, যা বিপুল।
তার মতে, অন্যান্য চাহিদা যেমন আবাসন ও জ¦ালানি চাহিদা পূরণে কুলিয়ে উঠতে না পারার সঙ্গে ফুড ব্যাংকের সেবা নেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত। আগে যারা সাহায্য করতেন জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তারাই এখন ফুড ব্যাংকের সহায়তা চাইছেন।
একই ধরনের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে কানাডার অন্যান্য ফুড ব্যাংকও। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ষিক ক্ষুধা প্রতিবেদনের জন্য টরন্টোভিত্তিক ডেইলি ব্রেড ফুড ব্যাংক ও নর্থ ইয়র্ক হার্ভেস্ট তাদের মার্চের উপাত্ত প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ থৈকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ফুড ব্যাংকের ব্যবহার বেড়েছে ১৬ শতাংশ। কর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশি চরম দারিদ্রের মধ্যে রয়েছেন, যাদের বাৎসরিক আয় ১৯ হাজার ডলার বা তার কম।
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এই ব্যক্তিদের মধ্যে আবার কৃষ্ণাঙ্গ ও আদিবাসীদের হার বেশি। এর কারণ হিসেবে উপনিবেশবাদের দীর্ঘ প্রভাব ও কৃষ্ণাঙ্গবিদ্বেষী কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে। কানাডিয়ান জার্নাল অব পাবলিক হেলথে ২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় শে^তাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ১ দশমিক ৮৮ গুন বেশি।
ভ্যানকুভারের গ্রেটার ভ্যানকুভার ফুড ব্যাংক সিটিভি নিউজ ভ্যানকুভারকে জানিয়েছে, বর্তমানে প্রতি মাসে ১ হাজার গ্রাহক পাচ্ছে তারা, গত বছর যেখানে ছিল ৪০০। নোভা স্কশিয়ার ফিড নোভা স্কশিয়া প্রতি সপ্তাহে ৩০০ নতুন গ্রাহক পাওয়ার কথা জানিয়েছে।