ব্যাংক অব কানাডা নীতিনির্ধারণী সুদের হার আবারও ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়েছে। বুধবারের এই বৃদ্ধির পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইঙ্গিত দিয়েছে, আগ্রাসী সুদের হার বৃদ্ধির চক্রে তারা বিরতি দিতে যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে, ২০৮৮ সালের জানুয়ারির পর এটাই সুদের সর্বোচ্চ হার। একইসঙ্গে তারা এও বলেছে, ভবিষ্যতে সুদের হার বৃদ্ধি নির্বর করবে ডেটার উপর। এটা এ বছরই দেওয়া আগের ঘোষণায় বড় পরিবর্তন। ওই সময় সুদের হার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
মার্চ থেকে এ পর্যন্ত সাতবার সুদের হার বাড়িয়েছে ব্যাংক অব কানাডা, যার উদ্দেশ্য মূল্যস্ফীতি কমানো এবং অর্থনীতিকে মন্থরতা দেওয়া।
সিআইবিসির প্রধান অর্থনীতিবিদ আভেরি শেনফিল্ড এক নোটে বলেছেন, ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার বুদ্ধির দলকে হলুদ কার্ড দেখিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, উচ্চ সুদের হার যে অর্থনীতিতে চাহিদার লাগাম টেনে ধরেছে সেটা আরও বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে। তৃতীয় প্রান্তিকে ভোগ মাঝামাঝি পর্যায়ে নেমে এসেছে এবং আবাসন বাজারের কর্মকা-ের মন্থরতা অব্যাহত রয়েছে।
অক্টোবরে সুদের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল, চলতি বছরের বাকি সময়ে এবং ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে প্রবৃদ্ধি থমকে থাকবে। তবে মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চ এবং স্বল্পমেয়াদে মূল্যস্ফীতি উচ্চই থাকবে।
অক্টোবরে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ব্যাংক অব কানাডার ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। যদিও প্রান্তিক হিসেবে বার্ষিক
মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশের নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থাৎ, মূল্যস্ফীতি সঠিক পথেই রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন তারা।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা তাদের নভেম্বরের ভোক্তা মূল্যসূচক প্রতিবেদন ২১ ডিসেম্বর প্রকাশ করবে, তাতে মূল্যস্ফীতির গতিবিধির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
অর্থনীতিবিদরা সাধারণত বলে থাকেন, অর্থনীতিতে সুদের হার বৃদ্ধির ফল পেতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে। এর প্রথম প্রভাবটা পড়ে অর্থনীতির সুদÑসংবেদী অংশে। এরপর খাতগুলোর ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে শুরু করে।
ব্যাংক অব কানাডাসহ অন্য অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস বলছে, চলতি বছর আগ্রাসী সুদের হার বৃদ্ধি অর্থনীতিকে লক্ষণীয়ভাবে মন্থর করবে। সর্বশেষ মুদ্রনীতি প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেচিল আগামী দুই প্রান্তিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিতে পারে।