অন্টারিওতে স্তন ক্যান্সারের রোগীদের অবস্থা খারাপ হতে দেখছেন চিকিৎসকরা। কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রদেশে ম্যামোগ্রাম সম্পন্ন হয় ৪ লাখেরও কম। অন্টারিও মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এমনটাই জানিয়েছে।
স্ক্রিনিং এরপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও সামিয়কভাবে স্ক্রিনিং হ্রাসের কারণে অনেক রোগীর অবস্থাই পরবর্তী পর্যায়ে চলে গেছে বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
শুরুর দিকে স্তন ক্যান্সার শনাক্তের সবচেয়ে ভালো পন্থা হলো ম্যামোগ্রাম স্ক্রিনিং। শুরুর দিকে এটি শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়ায় না। কোনো কোনো নারীদের বড় লাম্পসহ স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং তা পরবর্তী পর্যায়ে চলে যায়। এই পর্যায়ে স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা অনেক জটিল। অস্ত্রোপচারসহ অন্যান্য চিকিৎসার জন্য মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে ক্যান্সার রোগীদের এখন বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। অসম্পাদিত অস্ত্রোপচারগুলো সম্পন্ন এবং অপেক্ষমাণ সময়ে উন্নতি আনতে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ প্রয়োজন।
মহামারির কারণে লাখ লাখ অস্ত্রোপচার, স্ক্রিনিং টেস্ট ও ডাক্তার দেখানো বিলম্বিত হয়েছে। কারণ ওই সময় প্রদেশকে স্বাস্থ্যসেবার সব উপকরণকে ভাইরাস মোকাবিলায় কাজে লাগাতে হয়েছিল।
কুইন’স ইউনিভার্সিটির ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট ডা. টিমোথি হান্না বলেন, মহামারির প্রথম বছরে অন্টারিওতে সব ধরনের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং ৪২ শতাংশ হ্রাস পায়। এটা অবশ্যই পদ্ধতিভিত্তিক ইস্যু, যার ফলাফল এখন দেখা যাচ্ছে এবং এজন্য অবশ্যই পদক্ষেপ দরকার। চিকিৎসায় যত দেরি হবে, সেরে ওঠার ওপর প্রভাব তত বেশি হবে। অন্যান্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও আমরা একই চিত্র দেখতে পাই। পরবর্তী পর্যায়ের ক্যান্সারের অনেক রোগীকে সম্প্রতি আমি দেখেছি। আমার মনে হয়, এর সঙ্গে স্ক্রিনিংয়ে বিলম্বের একটা সম্পর্ক রয়েছে।
অটোয়া হসপিটালের মেডিকেল ইমেজিং বিভাগের ব্রেস্ট ইমেজিং সেকশনের প্রধান ও রেডিওলজিস্ট ডা. জঁ সিলি বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালে এখানে মাত্র তিন মাস স্ক্রিনিং বন্ধ ছিল। কিন্তু এর প্রভাবটা হয়েছে মারাত্মক। এখন আমরা অনেক নারীকে স্তন ক্যান্সারের উপসর্গ নিয়ে আসতে দেখছি। স্ক্রিনিংয়ে বিলম্বের কারণে রোগীদের সেরে ওঠার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে এবং দীর্ঘদিন তাদেরকে রোগটি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। ৪ লাখের কম ম্যামোগ্রামের অর্থ হলো ২ হাজার ৮০০ নারীর সময়মতো পরীক্ষা হয়নি। মহামারির আগে অটোয়া হসপিটালে স্তন ক্যান্সারের অর্ধেকই শনাক্ত হতো ম্যামোগ্রাম স্ক্রিনিংয়ে। মহামারির মধ্যে এ সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসে।
অটোয়া হসপিটালের ব্রেস্ট সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট ডা. এরিন করডেইরা বলেন, কোনো ক্যান্সারের অস্ত্রোপচারের জন্য এক বছরের বেশি সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পরীক্ষা ও অস্ত্রোপচারের এই দীর্ঘ অপেক্ষা রোগী ও পরিবার উভয়ের জন্যই চাপের।