বন্যা, ঝড় ও খরায় আগামী ৩০ বছরে কানাডার অর্থনীতিতে ১৩৯ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে। জিএইডর এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। কারণ, বন্যা, খরা ও ঝড়ে মহাসড়ক ধুয়ে নিয়ে যায়, ভবনের ক্ষতি করে এবং পাওয়ার গ্রিডের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
বৈশ্বিক প্রকৌশল ও স্থাপত্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জিএইচডির এই প্রতিবেদনের শিরোনাম অ্যাকোয়ানোমিকস। জিএইচডির কানাডিয়ান ওয়াটার লিড ডন হল্যান্ড বলেন, প্রতিবেদনে যেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে তা হলো অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতার ক্ষতি, সরবরাহ ব্যবস্থায় মূল্যের ক্ষেত্রে ব্যবস্থার ক্ষতি।
এক্ষেত্রে তিনি ২০২১ সালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বন্যার দিকে ইঙ্গিত করেন। ওই বন্যায় দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর ভ্যানকুভারের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এর ফলে কোভিড-১৯ এর কারণে এমনতিতেই সমস্যায় থাকা সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর চাপ তৈরি হয় এবং যন্ত্রাংশ না পাওয়া কারখানাগুলোর উৎপাদন শ্লথ হয়ে যায়। এতে করে কিছু মুদি দোকানের তাকগুলো খালি হয়ে যায়। এর পরোক্ষ প্রভাব ছিল ব্যাপক বলে জানান হল্যান্ড।
এখন থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে পানি-সম্পর্কিত জলবায়ু দুর্যোগের প্রভাব সবচেয়ে বেশি উৎপাদন ও বিতরণ খাতের ওপর পড়বে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬৪ বিলিয়ন ডলার বা মোট উৎপাদন অর্থনীতির দশমিক ২ শতাংশ।
খরা শিল্প উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে এবং বন্যা ও ঝড় ভবন ও যন্ত্রপাতির ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে অথবা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যার ফলে কারাখায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
খরাকে সব সময়ই কৃষির জন্য সত্যিকারের ঝুঁকি হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। কিন্তু চরম খরার প্রভাব আরও বেশি হতে পারে। রাইন নদীর প্রবাহ রেকর্ড পরিমাণ কমার ফলে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে জার্মাানি ও সুইজারল্যান্ডের মেজর বন্দরগুলোকে সংযোগকারী ইউরোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লেনগুলোতে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি চীনে তীব্র তাপদাহের ফলে কিছু কারখানায় পালাক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। কারণ, পানির স্তর কমে যাওয়ায় জলবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন কমে যায়।
এরপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে রিটেইল ও ফাস্ট-মুভিং কনজ্যুমার গুডস। পানিভিত্তিক অবকাঠামোর ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল খাতটিতে ২০২২ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২৬ বিলিয়ন ডলার। ব্যাংক ও বিমা খাতের ক্ষতি হবে ২১ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া জ¦ালানি ও পরিষেবা খাতের ক্ষতি দাঁড়াবে ১৪ বিলিয়ন ডলার। পঞ্চম সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত খাত হবে কৃষি। পরবর্তী ২৮ বছরে এ খাতের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪ বিলিয়ন ডলার।