
কানাডায় বার্ষিক মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে কিছুটা কমে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এতে ভূমিকা রেখেছে গ্যাসের মূল্য হ্রাস।
জুনে কানাডার মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়, প্রায় ৪০ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। যদিও এরপর থেকে মূল্যস্ফীতির হার কমবে বলে প্রত্যাশা ছিল অর্থনীতিবিদদের।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা তাদের সর্বশেষ ভোক্তা মূল্যসূচক প্রতিবেদনে বলেছে, জুলাইয়ে যে দাম বৃদ্ধি তা ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে কম। বার্ষিক ভিত্তিতেও ২০২০ সালের জুনের পর এটা প্রথম মূল্যস্ফীতির হ্রাস।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা বলছে, জুলাইয়ে গ্যাসের দাম বেড়েছে বার্ষিক ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে চলতি বছরের জুনের তুলনায় বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ। চলমান বৈশি^ক অর্থনীতির শ্লথগতি, চীনে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জনস্বাস্থ্য বিধিনিষেধ ও যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিনের চাহিদা হ্রাস বিশ^ব্যাপী অপরিশোধিত জ¦ালানি তেলের চাহিদা কমিয়ে দিয়েছে। এতে পণ্যটির দাম কমার চাপও তৈরি হয়েছে।
গ্যাসের দাম কমলেও মুদি দোকানগুলোতে খাদ্যপণ্যের দাম ১৯৮১ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বেড়েছে। বার্ষিক হিসেবে জুলাইয়ে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ এবং জুনের তুলনায় ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গমের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছর থেকে এ পর্যন্ত বেকারি পণ্যের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দামও দ্রুত গতিতে বেড়েছে। এর মধ্যে ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ দশমিক ৮ এবং তাজা ফলের ১১ দশমিক ৭ শতাংশ।
সুদের হার বৃদ্ধির কারণে মর্টগেজের সুদ বেড়ে যাওয়ায় বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জুলাইয়ে বাড়ি ভাড়া আগের মাসের চেয়ে দ্রুত বেড়েছে। ব্যস্ত গ্রীষ্মে বেশি সংখ্যক কানাডিয়ান ভ্রমণ করায় বিমান ভাড়া জুনের তুলনায় জুলাইয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভ্রমণকারীদের আবাসন ব্যয়ও এক বছর আগের
একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অন্টারিওতে।
সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশ আকাশচুম্বি পণ্যমূল্য নিয়ে হিমশিম খেলেও মূল্যস্ফীতি কমার ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতিও জুলাইয়ে কমেছে। তারপরও মূল্যস্ফীতির হার ব্যাংক অব কানাডার ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক উপরে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর সুদের হার বৃদ্ধি নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ব্যাংক অব কানাডা। সে পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে। ওই সময় আরেক দফা সুদের হার বাড়াতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।